আমাদের ভারত, ৬ নভেম্বর: “এবার ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এবং রিপাবলিকানরা সেনেটের দখল নেওয়ায় রীতিমত চাপে পড়লেন বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি ঘরোয়া বাধা সত্বেও পরিস্থিতির বাধ্যবাধকতায় ভারতকে নানা ব্যাপারে পাশে পেতে চাইবেন।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে এই প্রতিক্রিয়া দিলেন আন্তর্জাতিক রাজনীতির সুপরিচিত বিশ্লেষক, ‘দি হিন্দু’ ‘বিজনেস লাইন’-এর প্রাক্তন ডেপুটি এডিটর প্রতীম রঞ্জন বোস। তিনি বলেন, “এই পালাবদলে ভারত কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে। নিরাপত্তার অভাবে বাংলাদেশে ভারতের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এবার বাংলাদেশ বাধ্য হবে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে। সেনারা বাড়তি ক্ষমতা পাবে। কুর্সি বাঁচাতে নিজের ভাবমূর্তি জনপ্রিয় করতে মুহাম্মদ ইউনূস মাঝে মাঝেই কৌশলে ভারত-বিরোধী ভূমিকা নিয়েছেন।
বাংলাদেশে যেভাবে রাজনৈতিক পালাবদল হয়েছে, অনেকে তার নেপথ্যে বাইডেন প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতের অভিযোগ তুলেছেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে ক্রমাগত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপারে একাধিক বিবৃতি দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী-সহ ভারতের কিছু শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচনের মুখে স্বয়ং ট্রাম্প পর্যন্ত এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।
প্রতীম রঞ্জন বসুর কথায়, “ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর বরাবরই একটা বোঝাবুঝি রয়েছে। ২০২০ সালে মোদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ট্রাম্পের প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন। হয়তো সে কারণেই বাইডেন ক্ষমতায় আসায় প্রায় দু’বছর ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন না। ধাক্কা খেয়েছিল মার্কিন-ভারত সম্পর্ক। এবার ছবিটা বদলে যাবে।”
কেন, কীভাবে বদলাবে তা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে প্রতীমবাবু বলেন, “ট্রাম্প বরাবরই যুদ্ধখাতে বিশ্বজুড়ে মার্কিন বিনিয়োগের বিরোধিতা করেছেন। কারণ, ওই বিপুল বিনিয়োগে মার্কিন অর্থনীতি সমস্যায় পড়েছে। ’২০ নাগাদ ট্রাম্প বলেছিলেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা তুলে নেওয়া হচ্ছে। ভারত ওখানে সামরিক সহায়তা দিক। এভাবে তিনি উপমহাদেশে একদিকে ভারতকে গুরুত্ব দিয়েছেন, অপরদিকে চিনের শক্তিশালী প্রতিপক্ষ করে তুলতে ভারত ও রাশিয়াকে মদত দিয়েছেন ট্রাম্প। পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নত করেছেন তাঁর সঙ্গে মোদীর, পুতিনের। যা এই উপমহাদেশে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক সাগরে ভারত বাড়তি নজরদারির সুযোগ পেয়েছিল। রেড সি-তে সোমালিয়ার জলদস্যুদের শায়েস্তা করেছে।
প্রতীমবাবু জানান, “কানাডার সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যে অবনতি হয়েছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় সেই সমস্যা অনেকটাই দূর হবে। লাগাতার রাশিয়া-ইউক্রেন ও অন্য একাধিক যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার মাশুল অনেককে নানাভাবে দিতে হয়েছে। এই জটিলতাও এবার কমবে।”