ক্যাম্পের ঘরে ঝুলছে দেহ, বাইরে রক্তের চিহ্ন! বালুরঘাটে যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে

আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ১৬ মার্চ: ক্যাম্পের ঘর থেকে রহস্যমোড়া যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। পিটিয়ে খুনের অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে। উত্তেজনা বালুরঘাটের কুমারগ্রাম সীমান্তে। সোমবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ দিনাজপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কুমারগ্রাম বিওপি। চলে ভাঙ্গচুর। হাজার হাজার গ্রামবাসীর বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে যান বিএসএফের রায়গঞ্জ সেক্টরের ডিআইজি টি.পি.এস. সিদ্ধু, কোম্পানি কমান্ডার বি.এস. নেগী প্রমুখ।

পুলিশ জানায় মৃত ওই যুবকের নাম অলক বর্মন (১৯)। ঠাকুরপুরার চকশীতল এলাকার বাসিন্দা ছিল। এদিন ঘটনার খবর পেয়েই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিরাট পুলিশ বাহিনী পৌছয় এলাকায়। বিডিওর নেতৃত্বে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার তদন্তে নামে বালুরঘাট থানার পুলিশ। যদিও বিএসএফের দাবি, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ওই যুবক। ক্যাম্পের ঘরের ভেতরে গলায় ফাঁস দিলেও যুবকের শরীরের রক্ত বাইরে এলো কি করে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন?

ঠাকুরপুরার বাসিন্দা পেশায় কৃষক কৃষ্ণ বর্মনের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে অলোক। পারিবারিক অনটনের কারণে ভিন রাজ্যে কাজ করত সে। কিছুদিন আগেই বাড়ি ফিরে এসেছিল। অভিযোগ রবিবার রাতে তাঁকে ধরে নিয়ে যায় ১৯৯ নং ব্যাটেলিয়নের কুমারগ্রাম বিওপির বিএসএফ জওয়ানরা। বিষয়টি জানতে পেরে ক্যাম্পে গেলেও বাসিন্দাদের কাছে তাঁকে ছেড়ে দেয়নি বিএসএফ কর্তৃপক্ষ।এরপর সকালেই বাসিন্দারা জানতে পারেন ক্যাম্পের ভিতরেই ঝুলে রয়েছে অলোক। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতেই অলোককে মারধর করে খুন করেছে জওয়ানরা। যার পরেই আজ সকালে কয়েক হাজার বাসিন্দা ক্যাম্প ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। ভাঙ্গচুর করা হয়।

খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে যায় পতিরাম ফাঁড়ির পুলিশ সহ বালুরঘাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাবার সময় গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিতরা। যদিও ঘটনার পূর্নাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সবিতা বর্মন, উজ্জ্বল বর্মনরা অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় বিএসএফের মদতে দিনে রাতে পাচার কাজ চলে। কিন্তু নির্দোষ যুবককে ধরে মেরে খুন করা হয়েছে। তাঁর শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্নও মিলেছে।

মৃতের মা মমতা বর্মন বলেন, তাঁর ছেলেকে পিটিয়ে খুন করে গলায় ফাঁস দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ডিআইজি টি.পি.এস সিদ্ধু জানিয়েছেন, গত রাতে পাচারের সময় বিএসএফ ওই যুবকের কাছ থেকে ১ হাজার বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করে। তাঁকে ক্যাম্পের ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় সে।

বিডিও অনুজ সিকদার জানিয়েছেন, ঘটনা স্থলে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *