সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১১ জুন: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে শুরু হল বাগদায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বসানোর কাজ। রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে জমি হস্তান্তর করার পরেই এই প্রকল্পে হাত দিয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। প্রাথমিক পর্যায়ে বাগদার কুলনন্দপুর থেকে পাঁচবেড়িয়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে চলছে বেড়া বসানোর কাজ।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁটাতারের জন্য বাগদা ব্লকে মোট ১০২ একর জমি প্রয়োজন। ৬৫ একর জমি ইতিমধ্যেই বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি জমিও দ্রুত হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট ব্লকের এক আধিকারিক জানান, জেলা থেকে নির্দেশ আসার পরেই জমি অধিগ্রহণ করে বিএসএফকে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাগদা ব্লকের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল যেমন বয়রা, কুলিয়া, কুলনন্দপুর, লক্ষ্মীপুর ও রঙঘাট এলাকায় এতদিন কাঁটাতারহীন অবস্থায় ছিল। ফলে এই অঞ্চলগুলি দিয়ে অবাধে চলত অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান।
স্থানীয় বাসিন্দারা বহুদিন ধরেই এই বেড়া দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁদের আশা, সীমান্তে কাঁটাতার বসলে শুধু অবৈধ অনুপ্রবেশই নয়, পাশাপাশি নিরাপত্তার অভাবজনিত আতঙ্ক থেকেও মুক্তি মিলবে। বয়রা পঞ্চায়েতের দাবি, সীমান্তে বেড়া বসলে দুষ্কৃতীদের যাতায়াত রুখে দেওয়া সম্ভব হবে। মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবেন। এছাড়া, বিএসএফও সীমান্তে নজরদারির কাজ অনেক সহজে করতে পারবে। শুধু বাগদা নয়, পাশাপাশি বনগাঁ ও গাইঘাটা ব্লকেও সীমান্ত বেড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। বনগাঁ ব্লকে কাঁটাতারের জন্য প্রয়োজন প্রায় ২৪ একর জমি। ১২ একর জমি ইতিমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। গাইঘাটা ব্লকের ক্ষেত্রে প্রয়োজন প্রায় ১০০ একর জমি, যার অর্ধেক ইতিমধ্যেই বিএসএফের হাতে এসেছে।
জানা গিয়েছে, বনগাঁ মহকুমার মোট সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৭২ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত ও বাকি ২০ কিলোমিটার জল সীমান্ত। দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ২০ কিলোমিটার সীমান্তে কোনও কাঁটাতার ছিল না। এই খোলা সীমান্ত ব্যবহার করে অসাধু ব্যক্তিরা সীমান্ত পার হয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ত। এবার সেই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা। সূত্রের খবর, আগামী দিনে বাকি জমি দ্রুত হস্তান্তরের কাজ শেষ করে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে।