আমাদের ভারত, ২২ এপ্রিল: কলকাতা হাইকোর্টে বড় ধাক্কা খেলেও এখুনি পিছু হঠছে না রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন। সাংবাদিক সম্মেলনে এসএসসি’র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার স্পষ্ট করে দিয়েছেন উচ্চ আদালতের রায়ে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেলটাই বাতিল করে দেওয়ার রায়ে তিনি একেবারেই খুশি নন। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার কথাই তারা ভাবছেন।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সব্বার রাশিদি ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেলের মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি যারা চাকরি পেয়েছিলেন তাদের প্রাপ্ত বেতন বার্ষিক ১২ শতাংশ সুদের হার সহ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই ইস্যু নিয়ে রাজ্য রাজনীতি এখন তোলপাড়। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিদ্ধার্থবাবু প্রশ্ন তুলেছেন অবৈধ নিয়োগ হয়েছে পাঁচ হাজার জনের। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হোক, কিন্তু এর ফলে কেন ২৬ হাজার জনকে ভুগতে হবে? এই যুক্তিতেই তারা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলে ভাবছেন বলে জানিয়েছেন।
সাংবাদিকদের উত্তরে সিদ্ধার্থবাবু বলেন, রায়ের কপি এখনো হাতে পাননি। শুধুমাত্র সংবাদ মাধ্যমের খবরের ওপর ভিত্তিতে যেটুকু যা জানার জানতে পেরেছেন। এর ভিত্তিতে সবটা বলা সম্ভব নয়। তাকে পুরো রায়টা খতিয়ে দেখতে হবে। তাদের আইনজীবীদের সঙ্গেও কথা বলতে হবে, তবেই তিনি কিছু বলতে পারবেন।
এরপরে তিনি যোগ করেন, এই যে যোগ্য ও অযোগ্যের যে বিভাজন সেটা তো আমরা অবশ্যই এফিডেফিট সহকারে কোর্টে পেশ করেছি। আমরা বলেছি আমাদের চোখে এবং অবশ্যই সিবিআই’য়ের অনুসন্ধানের পরে কতজন মোট নিয়োগ পেয়েছেন এবং কতজনের ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে সেটা ওএমআর সংক্রান্ত হোক বা র্যাঙ্ক জাম্পিং অভিযোগ হোক সেটা কিন্তু আলাদা করে দিয়েই আমরা মহামান্য আদালতের কাছে পেশ করেছি। তার পরেও এক ধাক্কায় সবার চাকরি বাতিলের প্রশ্নে সহমত হতে পারছেন না সিদ্ধার্থবাবু। তিনি স্পষ্ট করে দেন ওএমআর শিট পুনর্মূল্যায়নের ব্যাপারে কোনো রায় হয়েছে কিনা সেটা তিনি জানেন না। শুনানি চলাকালীন মহামান্য আদালত কখনো কখনো বলেছেন, আপনারা কী করতে পারবেন? আমাদের কাছে সিবিআই’য়ের কাছ থেকে যা এসেছে সেটা আমরা জানিয়েছি। এরপরে কী আছে, কোনটা সম্ভব, কোনটা নয়, সেটা রায় দেখা না অব্দি বলা সম্ভব নয়।
নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া তা হলে কবে শুরু হবে? কবে দুর্ভোগ মিটবে এই মামলার জালে আটকে থাকা হাজার হাজার চাকরি প্রার্থীর? এক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের বক্তব্য, “নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি এখনই করা সম্ভব না হলেও, তারা সেটা যত দ্রুত সম্ভব করে ফেলতে চান। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা তো একটা স্বাভাবিক কাজ, এটা এসএসসির কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। সেটা দীর্ঘদিন হয়নি নানা কারণে। কিন্তু কোর্টের যদি নির্দেশ থাকে, সেটা তো আজ নয় কাল করতেই হবে। এখন তার কিছু পূর্ব শর্ত আছে। আমাদের নতুন বিধি চাই। সেই বিধি পাশ হবে। শূন্য পদ আসবে। তবেই আমরা করতে পারব। সেগুলো যদি আসে, সরকার যদি সবুজ সংকেত দেয়, যদি আদালতের নির্দেশ থাকে, আমরা অবশ্যই নিয়োগ শুরু করতে পারব।”