BJP, Sukanta, আবারও কেন সুকান্তকেই বঙ্গ সেনাপতি বেছে নিতে চলেছে বিজেপি?

শ্রীরূপা চক্রবর্তী, আমাদের ভারত, ২২ মার্চ: তিনি এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কেন্দ্রের অন্তত দুটি দপ্তরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ফলে মনে করা হচ্ছিল তাঁকে বঙ্গ সেনাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেবে পদ্ম শিবির। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তা হবার নয়। বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, সুকান্ত মজুমদারকেই বঙ্গ বিজেপির সেনাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার কথা স্থির করা হয়েছে। কিন্তু কেন আবারো সুকান্তর উপর ভরসা রাখতে চাইলো পদ্ম নেতৃত্ব?

দিল্লিতে শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারের ডাকা বৈঠকে গেরুয়া ফুলের তোড়া নিয়ে উপস্থিত হতেই চাউর হয়ে গেছে বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বে থেকে যাচ্ছেন সুকান্ত। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজেও কিছুটা ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন এটা অভিনন্দনেরও হতে পারে আবার ফেয়ারওয়েলেরও হতে পারে। কিন্তু সেদিন সুকান্ত মজুমদারের বাড়িতে ঘটমান সবকিছু হিসেব নিকশ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা প্রায় সকলেই মনে করেছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতির দায়িত্বভার তাঁর কাঁধেই থাকছে।

দলীয় রাজনীতির পরিসরে তিনি ততটা পুরনো নন। তবে তাঁর রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা যে যথেষ্ট দৃঢ় তার পরিচয় আগেই পাওয়া গেছে। যে কাজে নামেন সেটাকে যত্ন নিয়ে করার চেষ্টা যেমন করেন, তেমন সেই কাজের মধ্যে দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ধার বেশ কিছুটা বাড়িয়ে নেন। দীর্ঘদিন অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত হবার কারণে তার বুদ্ধিজীবী মহল সম্পর্কে ধারণা বা তাঁদের সাথে তাঁর যোগাযোগ সম্পর্কে সর্বোপরি বুদ্ধিজীবী মহলে তার গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে তাঁর এই সহজাত বৈশিষ্ট্যকে পদ্ম নেতৃত্ব কাজে লাগাতে চাইছেন আগামী দিনে।

দিলীপ ঘোষের সময় বিজেপি সবচেয়ে বেশি আসন লাভ করেছিল। কিন্তু পদ্ম নেতাদের বিশ্লেষণ এই লাভ ক্ষতির হিসাব ছিল গ্রাম ভিত্তিক। বিজেপি তখনো শহরকে ছুঁতে পারেনি। শহরে বুদ্ধিজীবী মহলের সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব বজায় ছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে সুকান্ত মজুমদারের নিজস্ব এটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে শহরে। যার ফলে দেখাগেছে গত লোকসভা নির্বাচনে বেশিরভাগ পৌরসভা এলাকাতেই বিজেপির ফল ভালো। আর এটাকেই সম্ভবত আগামীতে কাজে লাগাতে চাইছে পদ্ম নেতৃত্ব।

ইতিহাস বলছে, বিপ্লব অর্থাৎ পরিবর্তন আনে সাধারণ মানুষ, গরিব খেটে খাওয়া মানুষ। কিন্তু এদেরকে নেতৃত্ব দেয় বা এদেরকে পরিবর্তনের জন্য প্রভাবিত করে কিন্তু শহুরে বুদ্ধিজীবী বা শহুরে মধ্যবিত্ত। আজ সেই অংশের মানুষের মধ্যে কিন্তু বিজেপির প্রতি উৎসাহ তৈরির পেছনে রয়েছেন অবশ্যই সুকান্ত মজুমদার। ভদ্র শিক্ষিত ঝকঝকে এক রাজনীতিক। রুচিশীল বাঙালির কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য হয়েছেন। ফলে তাঁর মাধ্যমেই রাজ্যের মানুষকে একাট্টা করার পরিকল্পনা সম্ভবত করছে পদ্ম শিবির।

তাই হয়তো মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব থাকার পরেও আরো একবার বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে বেছে নিতে চলেছে পদ্ম নেতৃত্ব। জানাগেছে পয়েলা বৈশাখ থেকেই ২৬- এর নির্বাচনের প্রচারে মাঠে নেমে পড়তে চলেছে বঙ্গ পদ্ম শিবির। তার জন্য ইতিমধ্যেই সংগঠনকে তৃণমূল স্তর থেকে গোছানোর কাজও বেশকিছুটা সেরে ফেলেছে তারা। এবার দেখার এই সব পরিকল্পনা কতটা ফলপ্রসূ হয় আগামীতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *