আমাদের ভারত, ৩ মে: রাজ্য হিন্দুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রেখেছে তৃণমূল সরকার। পূর্ব বর্ধমানে ভোট প্রচারে এসে এমনটাই দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের ভাষণকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ শানান প্রধানমন্ত্রী। সন্দেশখালি ইস্যুতেও সরব হন শাসক দলের বিরুদ্ধে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি কাল টিভিতে দেখলাম এখানে বাংলায় তৃণমূলের এক বিধায়ক প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন। তিনি বলছিলেন হিন্দুদের দু’ঘণ্টায় ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেব। এটা কী ধরনের ভাষা? কী ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি? হিন্দুদের ভাসিয়ে দেবে? সত্যিই কী হাল হয়েছে ? বাংলায় হিন্দুদের সাথে কী হচ্ছে? মনে হচ্ছে বাংলায় হিন্দুদের তৃণমূলের সরকার দ্বিতীয় স্তরের নাগরিক করে রেখেছে। ”
সন্দেশখালির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদের জয় শ্রীরাম বললেও সমস্যা। জয় শ্রীরাম বলে ওদের জ্বর আসে। এদের রাম মন্দির তৈরিতে আপত্তি। এদের রাম নবমীর শোভাযাত্রায়ও আপত্তি। আমিও তৃণমূল সরকারকে প্রশ্ন করতে চাই এখানে সন্দেশখালিতে আমাদের দলিত বোনেদের সাথে এত বড় অপরাধ হলো গোটা দেশ পদক্ষেপের দাবি তুলেছিল, কিন্তু তৃণমূল অপরাধীকে বাঁচাতে ব্যস্ত ছিল, তা কি শুধু এই জন্য যে অপরাধীর নাম ছিল শাজাহান শেখ?”
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, তৃণমূল, সিপিএম কিংবা কংগ্রেস কেউ দেশের উন্নয়নের জন্য ভোটে লড়ছে না, ওরা শুধু বিভাজন বোঝে। প্রধানমন্ত্রীর আরও দাবি, ইন্ডিয়া জোটের কাছে দেশের জন্য কোনো ভিশন নেই, ওরা শুধু ধর্মের নামে দেশটাকে বিভক্ত করতে চায়। তৃণমূলের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন করেন ভোট ব্যাঙ্ক কি মানুষের জীবনের থেকেও বড়? ভোট ব্যাঙ্ক কি মানব ধর্মের থেকেও বড়?” অভিযোগের সুরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কংগ্রেসের লোকেরা প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে ভোট জেহাদ করার কথা বলছে। আমাদের দেশে কয়েক দশক ধরে গোপনে এই ভোট জেহাদ চলছে। এবার প্রকাশ্যে এরা ভোট জেহাদের কথা বলছে। আর এই ভোট জেহাদকে সমর্থন করছে ইন্ডিয়া জোট।” এরপরেই প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ওদের উত্তর দিতে হবে তো? আপনি দেশের নামে ভোট দিন। বিকশিত ভারতের জন্য ভোট দিন। তৃণমূল হোক, কংগ্রেস হোক বা বামেরা হোক, ইন্ডিয়া জোট নিজেদের ভোট ব্যাঙ্কের জন্য সব কিছু করতে পারে। তাই আমরা দেশের জন্য ভোট দেবো।”
প্রসঙ্গত, ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের একটি ভাষণ ভাইরাল হয়। তাতে তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “দুঘন্টার মধ্যে যদি তোমাদের ভাগীরথীতে না ফেলতে পারি রাজনীতি থেকে সরে যাব। শক্তিপুর এলাকায় বসবাস করা বন্ধ করে দেব তোমাদের। তোমরা হাতির পাঁচ পা দেখেছো। কিন্তু যদি ভেবে থাকো ৩০ শতাংশ লোক মুর্শিদাবাদ জেলায়, আমরা ৭০ শতাংশ এখানে। রামনগরে তোমরা বেশি আছো বলে কাজীপাড়ার মসজিদ ভাঙ্গবে, আর বাকি এলাকায় মুসলিম ভাইয়েরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবে এটা কোনদিন হবে না।” এই ভিডিও সম্পর্কে তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবিরের দাবি, “এই কথা আমি বিজেপিক বলেছি। হিন্দুদের নয়। বিজেপিকে উদ্দেশ্যে করে কথাগুলি বলেছিলাম।”