আমাদের ভারত, ৬ আগস্ট: সোমবার রাত পর্যন্ত বাংলাদেশে শুধুমাত্র পঞ্চগড় জেলায় ২২টি বাড়ি, ঝিনাইদহে ২০টি বাড়ি এবং যশোরে ২২টি দোকান মৌলবাদীদের লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছে। অনেক জেলায় শ্মশানেও ভাঙ্গচুর করা হয়েছে। মন্দির ও গুরুদ্বারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশে এমন কোনও জেলা নেই যা তাদের হিংসা ও সন্ত্রাসের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়নি।”
মঙ্গলবার এই অভিযোগ তুলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি করেছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আন্তর্জাতিক সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী অলোক কুমার এবং পরিষদের জাতীয় মুখপাত্র বিনোদ বনসল।
এক সংবাদ সম্মেলনে অলোক কুমার বলেন, আমাদের প্রতিবেশী বাংলাদেশ এক অদ্ভুত অনিশ্চয়তা, হিংসা ও নৈরাজ্যের মধ্যে আটকা পড়েছে। হাসিনা সরকারের পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এই সংকটের সময়ে, ভারত বাংলাদেশের সমগ্র সমাজের বন্ধু হিসেবে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।
অলোক কুমার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে হিন্দু, শিখ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্থান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি লক্ষণীয় যে বাংলাদেশে হিন্দুরা, যাদের সংখ্যা একসময় ৩২% ছিল, এখন তারা ৮%-এরও কম এবং ক্রমাগত জিহাদি নিপীড়নের শিকার।
ভিএইচপি সভাপতি বলেন যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ঘর, বাড়ি, দোকান, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মহিলা, শিশু এমনকি তাদের মন্দির, গুরুদ্বার এবং অন্য আস্থা ও বিশ্বাসের কেন্দ্রগুলি নিরাপদ নয়। বলা যায়, সেখানে নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের অবস্থা খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি অত্যন্ত চিন্তাজনক। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া বিশ্ব সমুদায়ের দায়িত্ব।
অলোক কুমার বলেন যে, ভারত অবশ্যই এই পরিস্থিতিতে অন্ধ থাকতে পারে না। ভারত ঐতিহ্যগতভাবে সারা বিশ্বের নিপীড়িত সমাজকে সাহায্য করেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ৪,০৯৬ কিলোমিটার (২,৫৪৫ মাইল) দীর্ঘ সীমান্তের ওপার থেকে অনুপ্রবেশের বড় চেষ্টা চালানো হতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তাই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য প্রয়োজন সীমান্তে কঠোর নজরদারি রাখা এবং সর্বথা অনুপ্রবেশ বাধিত করা অতি আবশ্যক।
ভিএইচপি সভাপতি বলেন, আমাদের ইচ্ছা বাংলাদেশে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গণতন্ত্র ও নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হোক। সেখানকার সমাজ যেন মানবাধিকার পায়। বাংলাদেশের অব্যাহত অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে কোনো বাধা না থাকে। ভারতীয় সমাজ ও সরকার এ ব্যাপারে বাংলাদেশের মিত্র থাকবে।