আমাদের ভারত, ৬ আগস্ট: শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লেও আপাতত দেশজুড়ে হিংসা জারি রয়েছে পদ্মা পাড়ে। এই আবহে বাংলাদেশের বহু জায়গায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বাংলাদেশি সংবাদ মাধ্যম প্রথম আলোতে প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, মেহেরপুরে আরো অন্তত
৮-৯টি হিন্দু বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। ভাঙ্গচুর হয়েছে বহু মন্দিরে। এমনকি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মন্দিরে থাকা বিগ্রহ।
মেহেরপুরে আওয়ামি লিগের এক হিন্দু নেতার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। পল্লব ভট্টাচার্য নামে ওই আওয়ামি নেতার দোতলা বাড়ির নিচ তলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পেশায় আইনজীবী পল্লব বাবুর বাড়িতে যত বই ছিল তা পুড়ে গিয়েছে। মেহেরপুরে আরো হিন্দুর বাড়িতেও হামলা হয়েছে। মেহেরপুর ইসকন মন্দিরও হামলা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে। সেখানে জগন্নাথ দেবের বিগ্রহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল থেকে অশান্তির পরিবেশের ফাঁকে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় হামলার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশের হিন্দু- বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে, সে দেশের ২৯টি জেলায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। অরাজনৈতিক সাধারণ মানুষের বাড়ি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ভাঙ্গচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ভাঙ্গা হয়েছে মন্দির।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী হিন্দু বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এক বিবৃতি জারি করেছেন, সেখানে সোমবার তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের চারটি জেলাতে অন্তত নয়টি মন্দিরে ভাঙ্গচুর চালানো হয়েছে। ঐক্য পরিষদের নেতাদের বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে এক শ্রেণির বিক্ষোভকারীরা। বহু জায়গায় হিন্দু সংখ্যালঘুদের বাড়িতে লুটপাট চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ।
রিপোর্ট অনুযায়ী গতকাল ফেনি শহরের দুর্গা মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে।দিনাজপুরের পার্বতীপুর কালী মন্দির সহ পাঁচটি মন্দির ভাঙ্গচুর করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের দু’নম্বর ইউনিয়নের শ্মশান কালী মন্দিরেও হামলা চালানো হয়েছে। আগুন লাগিয়ে দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে মন্দির। নেত্রকোনা শহরের রামকৃষ্ণ মিশন এবং ইসকন মন্দিরে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা।
তবে একাধিক জায়গায় আন্দোলনকারী পড়ুয়া তথা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফে হিংসা থামানোর আর্জি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাপ্রধানও শান্তি ফেরানোর বার্তা দিয়েছিলেন কিন্তু তারপরেও হিংসা থামার নাম গন্ধ নেই। উত্তরোত্তর তা বেড়েই চলেছে।
এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করতে জেলায় জেলায় হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে বাংলাদেশে সেনা। প্রথম আলো রিপোর্ট অনুযায়ী সোমবারের সংঘর্ষে বাংলাদেশে ১০৯ জন এর মৃত্যু হয়েছে। রাজধানী ঢাকাতে ১৩টি পুলিশ স্টেশনে হামলা হয়েছে। বাংলাদেশের দুটি কারাগার ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক হোটেল, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়কের বাড়িতে।