সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৭ মার্চ: ২০২৬- এর বিধানসভা নির্বাচনে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়তে হবে, তা বুঝতে পেরেই ঘর গোছাতে নেমে পড়েছে শাসক দল। এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, সে বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত জেলার ওয়াকিবহাল রাজনীতি মহলও। সেই কারণে জেলার সব বুথেই সংগঠন ও নির্বাচন বিষয়ক প্রতিটি ক্ষেত্রেই কড়া নজর রাখছে তৃণমূল। এই কর্মসূচির প্রথম ধাপে তারা ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখছে। ভোটার তালিকায় যাতে একটিও মৃত ও ভুয়ো ব্যক্তির নাম না থাকে এবং দলীয় সমর্থকদের নাম বাদ না পড়ে সেটা সুনিশ্চিত করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার কাজ চালাচ্ছে। এই কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে।
দ্বিতীয় ধাপে তৃণমূল বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছে পঞ্চাশের বেশি ভোটে পিছিয়ে থাকা বুথ এলাকাগুলির ওপর। দীর্ঘদিন সরকারে থেকেও ওই সব বুথে দল কেন পিছিয়ে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে শাসক দল। ওই বুথগুলিতে পিছিয়ে থাকার কারণ হিসাবে ভোটারদের কাছে সরকারি পরিষেবা ঠিক মতো পৌঁছেছে কিনা তা দেখছে তারা। ওই বুথগুলিতে দলের কী ধরনের সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে, এবং সেগুলি মেটাতে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে তা সমীক্ষা করে দেখে মেরামতের ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী শাসক দল।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগেই পিছিয়ে থাকা বুথগুলিতে নিজেদের সংগঠন মজবুত করা হবে নিশ্চিত জয়ের জন্য। উল্লেখ্য, গত নির্বাচনগুলিতে যে সব বুথে ৫০-এর বেশি ভোটে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল সেই বুথগুলিকে চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গত শনিবার এক ভার্চুয়াল সভায়। সেই নির্দেশ পাওয়ার পর এ বিষয়ে তৎপর হয়েছে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। গত লোকসভার ফলাফল পর্যালোচনা করে পঞ্চাশের বেশি ভোটে পিছিয়ে থাকা বুথগুলিকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
এদিকে এনিয়ে বিজেপির পক্ষে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। তাদের সাফ জবাব, যে বুথগুলিতে তৃণমূল পঞ্চাশের বেশি ভোটে পিছিয়ে রয়েছে সেই বুথগুলিতে ভুয়ো ভোটার ও বহিরাগতদের ঢোকানোর উদ্যেশ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুথগুলিকে চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ভোটের দিন যাতে বুথ জ্যাম, ধমকানি চমকানি দিয়ে নিজেদের অনুকূলে ভোট করতে পারে সেটা করতে চাইছে তারা।জেলার সাধারণ বাসিন্দাদের মতে, নির্বাচন নিয়ে এত মরিয়া ভাব আগের কোন নির্বাচনে চোখে পড়েনি। মরা মানুষ ভোট দেয়, একজনের ভোট অন্যে দেয়, বুথে গিয়ে অনেকে শোনেন তাদের ভোট হয়ে গেছে, ভোট দিতে না দেওয়া ইত্যাদি অসংখ্য অভিযোগ থাকলেও এত তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না।