আমাদের ভারত, ৭ ফেব্রুয়ারি: রাজ্যে ফের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত বেশ কয়েকজন। মেদনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পর এবার বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে নদিয়ার কল্যাণীর রথতলা। এই ঘটনায় তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, অরাজকতার রাজত্ব চলছে পশ্চিমবঙ্গে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মাসোহারা দিয়ে অবৈধ বাজি কারখানা চলছে। আর তাতে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার উল্লেখ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, “ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অরাজকতার রাজত্বে পুরো সরকারটাই এখন অবৈধ।” তাঁর কথায়, একের পর এক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রমাণিত, দুষ্কৃতীরা রাজ্য প্রশাসনকে বিন্দুমাত্র ভয় পায় না। তিনি লিখেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্বৃত্তায়নের সুযোগে পশ্চিমবঙ্গের দিকে দিকে যেভাবে অবৈধ বাজির কারখানা গড়ে উঠেছে, তার কু-প্রভাব থেকে রাজ্যের সাধারণ মানুষের কোনও নিস্তার নেই। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা থেকে শুরু করে চম্পাহাটি কিংবা আজকের কল্যাণীর মতো ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনাই প্রমাণ করে দিচ্ছে মমতার শাসনে দুষ্কৃতীদের আর কোনও প্রসাশন ভীতি নেই। বরং শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের মাসোহারা দিলেই আরও অকুতোভয় হয়ে অবৈধ করবার চালিয়ে যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়ে যাচ্ছে অবৈধ বাজি ব্যবসায়ীরা!”
সুকান্ত মজুমদার মনে করিয়ে দিয়েছেন, “পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বিস্ফোরণের মতো কল্যাণীতেও স্থানীয় কাউন্সিলরের অনুগামী খোকন বিশ্বাস পলাতক রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তার টিকিও ছুঁতে পারেনি।” অভিযোগের সুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখেছেন, “বিস্ফোরণের তীব্রতায় সাধারণ মানুষের মৃত্যু হলেও অমানবিক মমতা সরকারের কোনও হেলদোলই নেই! কারণ তাঁর প্রশাসন শুধু ব্যস্ত অবৈধ কারবারীদের থেকে মোটা টাকা মাসোহারা নিতে।”
আজ বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কল্যাণীর
রথতলা। বিস্ফোরণের দাপটে উড়ে যায় কারখানা সহ বেশ কয়েকটি বাড়িও। ঘটনায় আগুনে পুড়ে কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বিরাট পুলিশ বাহিনী ও দমকল।
কিভাবে বিস্ফোরণ হয় তা স্পষ্ট নয়। এর আগে মেদিনীপুরের এগরা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটি ও মহেশতলায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছিল। শুক্রবার দুপুর দুটো নাগাদ রথতলার ঐ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। ঘটনায় আহতদের কল্যাণী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ওই কারখানায় শব্দবাজি তৈরি হতো। অসাবধানতাবশত কারখানায় আগুন লেগে যায়। কারখানার ছাদ উড়ে যায়। বেশ কয়েক ঘন্টার চেষ্টায় দমকল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই কারখানায় কতজন কাজ করতো তা এখনো স্পষ্ট নয়, ফলে আহতর সংখ্যা ঠিক করে জানা যাচ্ছে না। গত বছর মে মাসে পূর্ব মেদনীপুরের এগড়ায় খাদিকুলে এক বাজি কারখানায় আগুন লাগে, সেখানে ১১ জনের মৃত্যু হয়।এই ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। এগড়ার পর মুখ্যমন্ত্রী বাজি কারখানার উপর নজরদারির কথা বলেছিলেন। কিন্তু তারপরেই মহেশতলায় এক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। বিস্ফোরণ ঘটে কোলাঘাটে। কোথাও বাজি তৈরি করতে গিয়ে, কোথাও দুর্ঘটনা জেরে বিস্ফোরণ ঘটে। এবার বিস্ফোরণ ঘটলো কল্যাণীর রথতলায়। এবার এই বাজি কারখানাটি ছিল জন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়।