সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৩ ফেব্রুয়ারি: দলের মধ্যেই বেইমান-বিশ্বাসঘাতক রয়েছে। তাদের একঘরে করে দিতে হবে। গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে দীর্ন দলের নেতা- কর্মীদের উদ্দেশ্যে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর এই হুঁশিয়ারি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী গতকাল বিকেলে বাঁকুড়ার বিকনা হাইস্কুল মাঠে মহিলা তৃণমূলের একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রকাশ্যে এই হুঁশিয়ারি দেন।
এই সভায় দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে অরূপবাবু বলেন, “দলে অনেক বেইমান ও বিশ্বাসঘাতক আছে। এরা তৃণমূলের ছাতার তলায় থেকে ভোটের আগে বিশ্বাসঘাতকতা করে। ভোটের আগে যারা জোড়াফুলের বিরুদ্ধে গুজুর- গুজুর, ফুসুর-ফুসুর করেন তাদের গ্রামে একঘরে করে দেবেন।” দলের একাংশের প্রতি সাংসদের এমন মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। এনিয়ে জোর চর্চা চলছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
জেলা রাজনীতির ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ২০২৬ – এ বিধানসভা নির্বাচন। তাই এখন থেকেই ঘর গোছাতে শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। শাসকদল তৃণমূলও তার ব্যাতিক্রম নয়। অরূপবাবু ঘর গোছাতে গিয়েই এমন মন্তব্য করেছেন, এমনই মত প্রকাশ করছেন জেলা রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে তৃণমূলের মাথাব্যাথার কারণ গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের রাশ টানতে চাইছেন অরূপবাবু বলে মনে করছেন তারা। বাঁকুড়া জেলাতেও যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শাসকদলের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে উঠছে তা স্বীকার করে নিচ্ছেন তৃণমূলের অনেক নেতাই। শনিবার বিকনার এই সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে দলের নেতা কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে কার্যত ‘হুঁশিয়ারির’ সুরে অরূপবাবু আরও বলেন, “দল করতে হলে একটা দলই করতে হবে। সারা বছর তৃণমূল করব, আর ভোটের সময় টিকিট না পেলে অন্য দলে চলে যাব এমন কর্মীদের তৃণমূলে দরকার নেই। যারা এমন বেইমানি করে তাদের সতর্ক করে দেওয়া হল। তাদের চিহ্নিত করার কাজও শুরু হয়েছে।”
তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে জেলার রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিজেপি নেতা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, “টাকা-পয়সার ভাগাভাগি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে কোন্দল এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে কর্মীদের মধ্যে ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্যতাটুকুও নেই।” অরূপবাবুর এই হুঁশিয়ারি সেই কারণেই।