আমাদের ভারত, ২ জানুয়ারি: বৃহস্পতিবার সকালে মালদায় দুষ্কৃতিদের গুলিতে খুন হন তৃণমূলের সহ-সভাপতি দুলাল সরকার ওরফে বাবলা। রীতিমতো পিছু ধাওয়া করে তাকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এই হাড় হিম করা ঘটনায় দলের নেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছেন। এই ঘটনার দায় তিনি পুলিশের উপর চাপিয়েছেন।
নিজের দলের নেতার খুনের বিষয়ে পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন এবং গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু এর পাল্টা দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “রাজ্যের ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রলাপের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন। সীমান্তে নজরদারির জন্য ফাঁড়ি তৈরি করা দরকার, কিন্তু তার জন্য জমি না দিয়েও তিনি সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়ী করতেন অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য। কিন্তু এখন সব অভিযোগের সীমা অতিক্রম করে নিজের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দোষ দিতে শুরু করেছেন তিনি। তাঁর মতে, তার প্রশাসনের অধীনে অযোগ্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) এবং পুলিশ সুপার (এসপি) তার দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হত্যা করার জন্য বিদেশী অপরাধীদের সীমান্তে অনুপ্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন। এতদিন তিনি এ ধরনের ঘটনার জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করতেন।”
একই সঙ্গে সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন তুলেছেন, “কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যায় হঠাৎ এই পরিবর্তন কেন? তিনি কি এই ধরনের দাবি করে তার দলের লুটেরা, অপরাধী প্রতিনিধিদের অপকর্মকে ঢাল করার চেষ্টা করছেন?” এরপর একরকম হুঁশিয়ারির সুরে তিনি লিখেছেন, “মাননীয়া ম্যাডাম ভুলে যাবেন না, বাংলার মানুষ আপনার ছলচাতুরি দেখেছে। আপনি পশ্চিমবঙ্গের পবিত্রতাকে কলঙ্কিত করেছেন। আপনার প্রস্থান আসন্ন।”
প্রসঙ্গত, মালদার ঘটনায় পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের নেতা বাবলা সরকার খুন হয়েছেন। পুলিশের গাফিলতিতেই খুন হয়েছে বাবলা। ও আগে পুলিশের নিরাপত্তা পেতো। পরে ওর নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে। আগেও ওর উপর হামলা হয়েছে।
এরপর মমতা নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “আমার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং জনপ্রিয় নেতা বাবলা সরকারকে খুন করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের শুরু থেকেই তিনি দলের জন্য পরিশ্রম করেছেন। বাবলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ঘটনা জানার পর আমি দুঃখিত এবং মর্মাহত। অবিলম্বে দোষীদের বিচার করতে হবে। আমি এতটাই মর্মাহত ও দুঃখিত যে আমি কিভাবে শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানাবো জানি না। চৈতালিকে (নিহত নেতার স্ত্রী) বেঁচে থাকার এবং যুদ্ধ করা শক্তি দিন।
বৃহস্পতিবার ঝলঝলির মাতলা মোড় এলাকায় তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। বাইকে চেপে এসেছিল চার দুষ্কৃতী। বাইক থেকে নেমে বাবলা সরকারকে লক্ষ্য করে পর পর বেশ কয়েকটি গুলি চালায় তারা। তৃণমূল নেতার মাথায় গুলি লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। আহত অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।