আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, সিউড়ি, ৭ ফেব্রুয়ারি: সমস্ত জমি অধিগ্রহণ না করেই শুক্রবার দুপুর থেকে শুরু হলো কয়লা উত্তোলনের জন্য লাল মাটি কাটার কাজ। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প করেই চলবে কয়লা উত্তোলনের কাজ। এমনটাই জানালেন জেলা শাসক বিধান রায়। পাশাপাশি ক্যাম্প করে চলবে জমি অধিগ্রহণ এবং অভিযোগের কাজ।
বৃহস্পতিবার আদিবাসীদের বাধার মুখে পড়ে পিছু হঠেছিল প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ রক্ষায় রাতে জেসিবি মেশিন দিয়ে খেলার মাঠের কয়েক ফুট লাল মাটি কেটে ফিরতে হয়েছিল প্রশাসনকে। শুক্রবার ফের দুপুর থেকে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করে খেলার মাঠের পাশে উঁচু ঢিপি থেকে খনন কাজ শুরু করে প্রশাসন। এদিন অবশ্য কাউকে বাধা দিতে দেখা যায়নি। কারণ যে সমস্ত গ্রামের মানুষ বাধার সৃষ্টি করছিলেন সেই সাগড়বাঁধি, মথুরাপুর গ্রাম পুলিশ ঘিরে রেখেছিল। ফলে বিনা বাধায় জেসিব মেশিন দিয়ে প্রাথমিক ভাবে লালমাটি সরানোর কাজ শুরু করলো প্রশাসন। এরপর ব্যাসল্ট শিলা সরিয়ে তবেই কয়লার সন্ধান পাওয়া যাবে।
এদিন খনন কাজ শুরু করার সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা শাসক বিধান রায়, পুলিশ সুপার আমনদীপ, পিডিসিএলের চেয়ারম্যান পি বি সেলিম, রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম।
বিধান রায় বলেন, “শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করা হয়। আজ থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করা হলো। দুটি জেসিবি দিয়ে লাল মাটি সরানোর কাজ চলছে। শীঘ্রই আমরা কয়লা তুলতে পারব। জমি নিয়ে ৯০ শতাংশ সমস্যার সমাধান হয়েছে।”
যদিও এদিন ক্যাম্পের ছবি দেখে অনুমান করা গেল এখনও জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। এদিন চাঁদা মৌজা এলাকায় চারটি ক্যাম্প করে জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ডি এল আর ও রবিউল ইসলাম বলেন, “সকাল থেকেই লাইন দিয়ে বহু মানুষ জমির কাগজপত্র জমা দিয়ে গিয়েছেন। অনেকের অনেক কিছু সমস্যা রয়েছে। সব সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে।” তাঁর দাবি, সমস্ত জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি বলেই তো ক্যাম্প করা হয়েছে।
আমনদীপ বলেন, “এই কাজ চলতে থাকবে। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করেই খননের কাজ চলবে। প্রয়োজনে কয়লা উত্তোলন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে এলাকায় একটি জোরালো পুলিশ ক্যাম্প করা হবে”।
পি বি সেলিম বলেন, “খুশির খবর। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হলো। কিছু মানুষের জমি ও কাগজপত্র নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ক্যাম্পের মাধ্যমে সেই সমস্যা মিটিয়ে দেওয়া হবে। কাউকে বঞ্চিত করা হবে না। এলাকার মানুষের কর্মস্থান হবে। গ্রামের মানুষও আমাদের সহযোগিতা করছেন। সবার সহযোগিতায় কয়লা উত্তোলনের কাজ্জ শুরু করা হল।”