আমাদের ভারত, ৮ জুলাই: সন্দেশখালির মামলায় দেশের শীর্ষ আদালতে বড়সড় ধাক্কা খেল তৃণমূল সরকার। সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে রাজ্যের আর্জি খারিজ করেছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করেছে যেখানে সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের মত এত বড় অভিযোগ উঠেছে, যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে সেখানে কেন রাজ্য সরকার আলাদা করে আগ্রহ দেখাচ্ছে? কাউকে কি আড়াল করতে চাইছে রাজ্য সরকার?
সন্দেশখালি মামলায় আগেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কেবি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন যেখানে সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের মত এত বড় অভিযোগ উঠেছে, যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে কেন রাজ্য সরকার আলাদা করে আগ্রহ দেখাচ্ছে? শীর্ষ আদালতের পাল্টা প্রশ্ন, কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে রাজ্য?
চলতি বছরের শুরু থেকেই রেশন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি অভিযান ঘিরে এই ঘটনার সূত্রপাত। এরপর লোকসভা নির্বাচনের আবহাওয়া সন্দেশখালি জাতীয় রাজনীতির বিষয় হয়ে ওঠে। জমি দখল, নারী নির্যাতন, তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে একেবারে বাঁশ, লাঠি, গাছের গুঁড়ি নিয়ে রাস্তায় নামে গ্রামের মহিলারা। রাস্তায় আগুন জ্বলেছিল। নারী নির্যাতনের একের পর এক ভয়ঙ্কর অভিযোগ ওঠে। সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর নির্যাতন এবং জমি দখল করার অভিযোগ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।
সেই সময় হাইকোর্টের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল এতদিন হয়ে যাওয়ার পরও কেন শেখ শাহজাহানদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না? রাজ্য ঐ নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে যায়। গত ২৯ এপ্রিল শীর্ষ আদালতে মামলাটি ওঠে। কিন্তু সেই সময় রাজ্যের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি সওয়াল করেছিলেন এই সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য সামনে এসেছে। সেগুলি আদালতে জমা করতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। সেই সময় শুনানি মুলতবি রাখা হলেও তদন্ত প্রক্রিয়া যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয় তার নির্দেশ দেন বিচারপতি গাভাই। এতদিন মামলার শুনানি হয়নি। তবে আজকের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, “নারী নির্যাতনের মতো এত ভয়ঙ্কর অভিযোগ যেখানে রয়েছে সেখানে রাজ্য কেন সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করছে? তবে কি কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছে রাজ্য?”
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে বিজেপির তরফে বলা হয়, কিছু অনৈতিক দাবি নিয়ে কিছু অপরাধীকে বাঁচানোর জন্য মানুষেরই দেওয়া ট্যাক্সের টাকা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে রাজ্য বারবার পরাজিত হয়।