আমাদের ভারত, ২০ মার্চ: ওবিসি মামলায় হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও মুখ পুড়েছে রাজ্য সরকারের। আদালতে তিন মাসের মধ্যে নতুন ওবিসি তালিকা তৈরির কথা বলা হয়েছে। এদিকে তার পরেই রাজ্যে চাকরি বিতরণের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাতেই সরব রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি।
বঙ্গ বিজেপির সভাপতির দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সাংবিধানিক অখণ্ডতার বদলে সংখ্যালঘু তোষণকে অগ্রাধিকারের পদক্ষেপ আদালতে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। একই সঙ্গে তাঁর আশঙ্কা, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে নতুন তালিকা তৈরি করে চাকরি দেওয়ার কথা বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের চাকরি প্রার্থীরা বঞ্চিত হবেন। তাঁর মতে, মুখ্যমন্ত্রীর চাকরি দেওয়ার পরিকল্পনা আসলে সরকারি চাকরিতে সংখ্যালঘুদের আধিপত্য সুদৃঢ় করার কৌশল।
এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংখ্যালঘু তোষণ এবং নির্লজ্জ ভোটব্যাঙ্ক একত্রীকরণের রাজনীতি প্রকাশ্যে চলে এসেছে। তিনি যোগ্যতা এবং ন্যায়বিচারকে অগ্রাহ্য করে ওবিসি তালিকায় মুসলিমদের অন্তর্ভুক্তির জন্য অবৈধভাবে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। কিন্তু ওবিসি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে তার উদ্দেশ্য ফাঁস হয়ে যায় ও কলকাতা হাইকোর্টের রায় আসলে তাঁর গালে থাপ্পড়ের সামিল। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার সাংবিধানিক অখণ্ডতার চেয়ে তোষণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগে হাতেনাতে ধরা পড়েছে।
সুকান্ত মজুমদার অভিযোগের সুরে আরও লিখেছেন, এই আইনি বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রী সাহসের সাথে ঘোষণা করেছেন, ওবিসি মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেলে, তিনি ২-৩ লক্ষ চাকরি বিতরণ করবেন। এরপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এই চাকরিগুলি কে পাবে? এটি কি যোগ্য প্রার্থীদের বদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যত্নে লালিত পালিত ভোটব্যাঙ্কের দিকে সরকারি সুবিধাগুলি প্রবাহিত করার আরেকটি মরিয়া প্রচেষ্টা?”
সুকান্ত মজুমদার অভিযোগের সুরে লিখেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিটি নির্বাচনের আগে, তিনি তাঁর তোষণের রাজনীতিতে দ্বিগুণ সক্রিয় হন। বিতর্কিত সংখ্যালঘুপন্থী বক্তব্য থেকে শুরু করে পার্ক সার্কাসে ইফতার পার্টিতে প্রকাশ্যে অংশগ্রহণ, তার সংখ্যালঘুদের প্রতি আনুগত্যকে আরো স্পষ্ট করে তোলে। কিন্তু যখন হিন্দু দেবদেবীদের মূর্তি ভাঙ্গচুর করা হয়, মন্দিরে আক্রমণ করা হয় এবং হিন্দু উৎসবগুলিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়, তখন তিনি সম্পূর্ণ নীরব থাকেন। কেন এই বৈষম্য?
সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন, মমতার শাসনকালে বাংলা সংখ্যাগরিষ্ঠদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রান্তিককরণের সাক্ষী হয়েছে। রাজ্যে নানা জায়গায় দাঙ্গা, অনাচার এবং প্রকাশ্য তোষণের কারণে হিন্দুরা আজ প্রান্তিক অবস্থায় পৌঁছেছে। মৌলবাদের বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীরবতা এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির প্রকাশ্য উৎসাহ বাংলার সামাজিক সম্প্রীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
এরপর তিনি প্রশ্নের ছলে কটাক্ষ করে লিখেছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠরা যখন ভুগছে, তখন কি মুখ্যমন্ত্রীর এই চাকরি দেওয়ার পরিকল্পনা আসলে সরকারি চাকরিতে সংখ্যালঘুদের আধিপত্য সুদৃঢ় করার আরেকটি কৌশল? নানা সম্প্রদায়কে বিভক্ত করে এভাবেই কি তিনি শসান ব্যবস্থায় টিকে থাকতে চাইছেন? তাঁর কথায় বাংলা ন্যায়বিচার, উন্নয়ন এবং সমান সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছে। মমতার অবিরাম তোষণের রাজনীতির জন্য নয়।