আমাদের ভারত, ২০ মার্চ: ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে শুরু করে দক্ষিণ চিন সাগর, চোখ রাঙাচ্ছে চিনা ফৌজ। এই চিনকে রুখতে শক্তিশালী জোট স্কোয়াড তৈরি করেছে আমেরিকা। কিন্তু বাইডেন জমানায় এই জোটে ব্রাত্য ছিল ভারত। কিন্তু এবার হোয়াইট হাউসের পালাবদলের পর মার্কিন বিদেশ নীতির অভিমুখ বদলেছে। বেইজিং- এর দাদাগিরি রুখতে দিল্লিকেই আবারও ভরসা করছে আমেরিকা। আর সেটা স্পষ্ট হয়ে গেছে স্কোয়াড জোটে ভারতকে আমন্ত্রণ জানাতে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন সেই খবরে। এই সামরিক জোটে দক্ষিণ কোরিয়াকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
এই মুহূর্তে দক্ষিণ চিন সাগরে সামরিক মহড়া জোরদার করেছে বেজিং। ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের কৃত্রিম দ্বীপেও সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছে চিনা ফৌজ। ফলে বিপন্ন ওপেন ট্রেড রুট বা মুক্ত বাণিজ্য পথ। পাশাপাশি গত কয়েক মাস ধরে তাইওয়ান সীমান্তেও একাধিকবার অনুপ্রবেশ ঘটেছে চিনা যুদ্ধবিমান ও রণতরীর। এর ফলে আমেরিকা ও চিনের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হচ্ছে। তাই চিনের বাড়বাড়ন্ত রুখতে গত বছর প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নয়া কৌশল ন্যায় ওয়াশিংটন।
প্রাক্তন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন- এর নেতৃত্বে গঠন করা হয় স্কোয়াড। সেখানে আমেরিকার সঙ্গে রয়েছে জাপান- অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপিনস। কিন্তু তখন আমেরিকা ভারতকে রাখেনি।
কিন্তু অন্যদিকে আমেরিকার নেতৃত্বে তৈরি হয়েছিল কোয়ার্ড্রি ল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়লগ জোট বা স্কোয়াড। যার অংশ ভারত। সেখানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, জাপান। একাধিকবার এই জোটে সামরিক মহড়ায় সাগরে শক্তি প্রদর্শন করেছে। কিন্তু ভারত স্কোয়াডে থাকলেও ভারতের বিদেশ নীতি বা রাজনীতির নিজস্ব বহু মাপকাঠি রয়েছে। ফলে সব সময় যেটা পশ্চিমী বিশ্ব বা ওয়াশিংটনের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে চলে তাও নয়। চিনা আগ্রাসনে নয়া দিল্লির উদ্বেগ থাকলেও তা কখনো ওয়াশিংটন ব্লকের রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠুক এমনটা চায় না সাউথ ব্লক। সেই কারণেই হয়তো ভারতকে জায়গা দেয়নি বাইডেন প্রশাসন।
কিন্তু এখন আমেরিকায় ট্রাম্প জমানা। আর তিনি বিলক্ষণ জানেন, এশিয়া মহাদেশে এই মুহূর্তে সামরিক মহড়ায় চিনকে টেক্কা দেওয়ার মতো শক্তি একমাত্র ভারতেরই রয়েছে। শুল্কযুদ্ধ অভিভাষণ নীতি সহ একাধিক ইস্যুতে দিল্লি ওয়াশিংটনের মধ্যে চাপানউতোর চললেও লালফৌজের আগ্রাসন রুখতে এক জোট দু’দেশ।
এই পরিস্থিতিতে জানাগেল, স্কোয়াডে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়াকে, এই পরিকল্পনা চলছে। ফিলিপিনস- এর সেনাপ্রধান জেনারেল জানিয়েছেন, জাপান ও অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমরা স্কোয়াড জোটের সম্প্রসারণ করতে চাইছি। এর জন্য ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। আমরা ভারতের সঙ্গে হাত মেলাতে চাই, কারণ আমাদের শত্রু একজনই। আমার বলতে কোনো বাধা নেই, চিন আমাদের শত্রু। আমরা সকলেই এই দেশের আগ্রাসন রুখতে চাই। এই মুহূর্তে আমাদের একজোট হওয়া খুব প্রয়োজন। দিল্লিতে একটি সামিটে যোগ দিয়ে তিনি একথা জানিয়েছেন। ফলে মনে করা হচ্ছে যে, নয়া দিল্লির সঙ্গে ইতিমধ্যে স্কোয়াডেট প্রতিনিধিদের কথা হয়েছে।