Cheating, Kolaghat, প্রতারণা! চাকরি দেওয়ার নাম করে ৩০ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ, কোলাঘাটের এক হাই- স্কুলের দপ্তরীর বিরুদ্ধে

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ২৫ ফেব্রুয়ারি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ব্লকের সাগরবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনস্থ দেউলবাড় গ্রামের বাসিন্দা পরেশ ঘড়া হাইস্কুলের এক দপ্তরীর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে ৩০ লক্ষ টাকা ঘুস নেওয়ার অভিযোগ করেছেন। ওই সংক্রান্ত অভিযোগপত্র আজ কোলাঘাটের বিডিও, শিক্ষা দপ্তরের ডিআই এবং পুলিশের এসপি, কোলাঘাট থানার ওসি’কে দেওয়া হয়েছে।

পরেশবাবুর একমাত্র পুত্র গৌতম ঘড়া এমএ ও বিএড পাশ করার পর বর্তমানে বেকার। গত ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে স্থানীয় উত্তর জিঞাদা হাইস্কুলে কর্মরত এক কর্মী উত্তর জিঞাদা গ্রামের বাসিন্দা শঙ্কর মাইতি গৌতমকে শিক্ষকতার চাকরি করে দেবে বলে ওই হাইস্কুলের দপ্তরী শিবপ্রসাদ মণ্ডলকে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন পরেশবাবুকে। টাকা দিলে শিবপ্রসাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীর ভীমপুর সাঁওতাল হাইস্কুলে গৌতমকে ভূগোলের শিক্ষক হিসাবে চাকরি করে দেবে বলে জানায়। ওই কথার ভিত্তিতে পরেশবাবু শিবপ্রসাদের বাড়িতে গিয়ে ২২ জানুয়ারি ৫০ হাজার, ২৩ জানুয়ারি ৫ লক্ষ টাকা নগদে দেন। তারপর ২৪ জানুয়ারি শিবপ্রসাদদের শ্রীহরি হোসিয়ারীর অ্যাকাউণ্টে ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা অনলাইনে জমা করেন। সব মিলিয়ে ১৫ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার পর শিবপ্রসাদ ২৭ জানুয়ারি আবার বলে, আরো ১২ লক্ষ টাকা এরিয়া হিসাবে ওকে পাইয়ে দেবে ২০১৬ সাল থেকে চাকরি করছে এই পরিপ্রেক্ষিতে, এজন্য আরও ৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে। ঐ কথামতো ৫ ফেব্রুয়ারি ফের ৪ লক্ষ টাকা পূর্বের অ্যাকাউণ্টে জমা দেন পরেশবাবু। ওই অভিযোগপত্রে উনি জানান, এরপর শিবপ্রসাদ আমাকে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেয়। তবে স্কুলে কেস চলছে বলে জানায়। কেস মিটে গেলে নিয়োগ করানো হবে।

তারপর ০৫.১১.২০২১ তারিখে ৪৯ হাজার ৪৯০ টাকা শিবপ্রসাদ গৌতমের অ্যাকাউণ্টে জমা করে। আরো পরে ০৬.১১.২০২১ তারিখে ফের ৩ লক্ষ টাকা দেয়। এরপর প্রায় দেড় বছর নানা মিথ্যা অজুহাত দেখায় শিবপ্রসাদ। অতঃপর ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে উত্তর জিঞাদা হাইস্কুলের শিক্ষক অমল পাণ্ডের ভাই অজয় পাণ্ডে ঐ স্কুলে চাকরি করছে বলে জানিয়ে অজয়ও অনেক টাকা এরিয়ার হিসাবে পেয়েছে এবং গৌতমকে তা পাইয়ে দেবে বলে ৮ লক্ষ টাকা দিতে বলে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ০৭.০৮.২০২৩ তারিখে ৫ লক্ষ, ১৬.০৮.২০২৩ তারিখে ২ লক্ষ, ২১.০৮.২০২৩ তারিখে ১ লক্ষ মোট ৮ লক্ষ টাকা পুনরায় ওকে নগদে দেন পরেশবাবু। যা ওনার স্বাক্ষরিত ১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে লিখিত রয়েছে। ঐ অবস্থায় গৌতম একদিন ঐ স্কুলে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখে ঐ স্কুলে নিয়োগের বিষয়টি ভুয়ো। এরপর পরেশবাবুরা তাদের দেয় টাকা ফেরতের বিষয়ে শিবপ্রসাদের উপর চাপ সৃষ্টি করলে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে ২২.০৭.২০২৪ তারিখে একটি গ্রাম্য সালিশি সভা হয় বরদাবাড় প্রাইমারী স্কুলে। সেই সভায় ও ৬ মাসের মধ্যে ৫ লক্ষ, পরের দু’ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা ফেরৎ দিয়ে দেবে বলে জানায়। কিন্তু ৬ মাস অতিক্রান্ত হলেও মাত্র ১ লক্ষ টাকা ফেরৎ দিয়ে নানা অজুহাত দেখাতে থাকে। পরে ফোন করে টাকা চাইলে গৌতম ও পরেশকে কেটে, কুচিয়ে মেরে দেবে বলে শাসায়। পরেশবাবু বর্তমানে চূড়ান্ত হতাশ ও আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় দিনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই অভিযোগপত্রে। এবং অবশিষ্ট সাড়ে ২৮ লক্ষ টাকা সুদ সহ ফেরৎ এবং ঐ দপ্তরীর বিরুদ্ধে যাতে উপরোক্ত কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সেজন্য আধিকারিকদের কাছে আবেদন করেছে পরেশবাবু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *