আমাদের ভারত, ২৩ মার্চ: মালদার চাঁচলে সংবাদ সংগ্রহের সময়ে একটি বাংলা নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিকের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠলো তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে বিজ্ঞাপনের গেট নির্মাণ করা হয়েছিল মালদা জেলার চাঁচলে। স্টিং ভেঙ্গে পড়ে বাইক আরোহী দুই ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানাগেছে। সি এন নিউজ- এর সাংবাদিক অভিষেক তৃণমূল নেতাদের এই নিয়ে প্রশ্ন করতেই তারা লাইভ চলাকালীনই সাংবাদিককে ধাক্কাধাক্কি, গালিগালাজ এবং প্রাণনাশ হুমকি দেয়। ঘটনাস্থলে তখন পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কার্যত নির্বিকার দর্শকের ভূমিকা পালন করে তারা। জানাগেছে, হামলাকারীরা চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপ প্রধান মোক্তার হোসেন ও পঞ্চায়েত সদস্য অমিতেশ পান্ডে।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি হামলার মুহূর্তের ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গের ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দুষ্কৃতীরাজে এখন পশ্চিমবঙ্গ মানে শুধুই নৈরাজ্য। প্রতিদিন বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শের নেতা কর্মীদের হুমকি খুনের ঘটনা এ রাজ্যের সমস্ত প্রান্তে ঘটছে। সাধারণ মানুষও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোষা দুষ্কৃতিদের আতঙ্কে কাঁপছে। তাবেদার পুলিশ প্রশাসন এবং কুখ্যাত গুন্ডাদের ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখার অপচেষ্টা চলছে গোটা বাংলায়। আর দিদির বাংলায় সংবাদ মাধ্যমের এই পরিস্থিতি।
তিনি লিখেছেন, “একবার দেখুন, কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া আজকের ভয়ঙ্কর ছবি। মালদার চাঁচলে একটি দুর্ঘটনার খবর করতে গিয়ে শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের হাতেই আক্রান্ত হতে হলো পশ্চিমবঙ্গের একটি বহুল প্রচারিত বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিকে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের পদাধিকারীকে অপ্রিয় প্রশ্ন করতে সরাসরি গায়ে হাত দিয়ে প্রাণ সংশয়ের হুমকি দিলেন তৃণমূলের দুই নেতা। একজন কর্তব্যরত সাংবাদিককে অশালীন ভাষায় কটুক্তিও করা হলো। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জঙ্গলরাজে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমের উপর বারংবার আক্রমণের ঘটনা ব্রিটিশ আমলের বর্বরতাকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। ছিঃ!”
জানাগেছে, উত্তর মালদা বইমেলা উপলক্ষে চাঁচোল লাইব্রেরি গেটের কাছে ৮১নং জাতীয় সড়কের ওপর এক বেসরকারি বিদ্যালয়ের ওভারহেড বিজ্ঞাপনের গেট তৈরি করা হয়েছিল। রবিবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ এই গেট ভেঙ্গে পড়ে। সেই সময় রাস্তা দিয়ে একটি বাইকে চড়ে যাচ্ছিলেন দুই আরোহী। তাদের উপর সেটি পড়লে দুই বাইক আরহী ছিটকে পড়েন। গুরুতর আহত হন তারা। এই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূলের স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অমিতেশ পান্ডেকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে ক্ষুব্ধ জনতা। খবর পেয়ে সেখানে যায় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। সেই সময় চাঁচোল গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের উপপ্রধান মোক্তার হোসেন এবং গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অমিতেশ পান্ডে সিএন নিউজের সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। সেই সময় ঘটনাস্থলে চাঁচল থানার একজন পুলিশ কর্মীকে দেখা গেছে। তিনি কার্যত দর্শকের ভূমিকায় পালন করেছেন বলে অভিযোগ।