আমাদের ভারত, ২৩ মার্চ: বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা নির্যাতন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। ক্রমাগত আক্রমণের শিকার হয়েছে বাংলাদেশের হিন্দুরা। ফলে রাষ্ট্রসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মহলকেও বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন আরএসএস নেতৃত্ব।
বেঙ্গালুরুতে আরএসএস-এর অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভার তিনদিনের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশ ইস্যু উত্থাপন করেন সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব। বাংলাদেশ সরকার ও প্রাতিষ্ঠানিক মদদে হিংসা ও ঘৃণা ছড়িয়ে হিন্দু নির্যাতনের তীব্র নিন্দা করেছেন তারা। তাদের মতে সে দেশে থাকা হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়া সহ হিংসায় সরকার মদত যোগাচ্ছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সম্প্রতি যে শাসক জমানার বদল হয়েছে তারপল থেকে হিন্দুদের মন্দির, দুর্গাপূজা মণ্ডপে ভাঙ্গচুর চলছে। অপহরণ, লুটপাট এবং নারী নিগ্রহের সঙ্গে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নির্যাতনের ফলে বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা কমেছে। ১৯৫১ সালে সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দু ছিল ২২ শতাংশ, সেখানে বর্তমানে হিন্দুর সংখ্যা ৭.৯৫ শতাংশ। এটাই প্রমাণ হয় সে দেশে হিন্দুদের অস্তিত্ব সঙ্কটে রয়েছে।
আরএসএস- এর প্রচারক অরুণ কুমার এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের উপরই পরিকল্পিত হিংসা, অন্যায় এবং নিপীড়ন নিয়ে উদ্বিগ্ন অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার হিংসা রোধে কোনো পদক্ষেপ করেনি। এর ফলে ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এই আবহে বাংলাদেশের হিন্দু সহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সব রকম পদক্ষেপদের জন্য ভারত সরকারের কাছেও আবেদন জানানো হয়েছে তাদের তরফে।
ভারতে এসে ইসলামী সন্ত্রাস এবং বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন আমেরিকার গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গাবার্ড। এর জেরে ঘুম উড়েছে বাংলাদেশের। বিগত কিছুদিন বাংলাদেশে ক্রমেই মৌলবাদ বেড়েছে। ধর্মের নামে সরকারি চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ পর্যন্ত করানো হয়েছে সংখ্যালঘুদের। চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত সে দেশের সেনাও। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভু গ্রেফতার হয়েছে। ইস্কনকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে সেখানে। হিন্দুদের বিরুদ্ধে লাগাতার উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। এই পরিস্থিতিতে ভারতের রাস্তাতেও লোক নেমেছে। বাংলাদেশি মৌলবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান উঠেছে এখানেও। ভারত সরকারও একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করে ওপারে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।