পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ১২ ফেব্রুয়ারি: নাতনির বিয়ের উদ্দেশ্যে ২০১৪ সালে পোস্ট অফিসে নিজের নামে ১০ হাজার টাকা রেখেছিলেন রুমার শাশুড়ি অনুছায়া ভদ্র আর নমিনি ছিলেন বৌমা রুমা। ২০১৮ সালে শাশুড়ি অনুছায়া ভদ্র মারা যাওয়ায় বৌমা রুমা টাকা তুলতে গেলে ঘটে বিপত্তি। পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ জানান, টাকার দাবি করতে হলে শাশুড়ির মৃত্যুর সংসাপত্র লাগবে।
এদিকে শাশুড়ির মৃত্যু সংসাপত্র রুমার ভাসুরের কাছে থাকায় ভাসুর মৃত্যুর সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ করেন বেলিয়াবেড়া ব্লকের চোরচিতা গ্রামের রুমা ভদ্র। সমস্যার সমাধানের জন্য বেলিয়াবেড়া ব্লকের “অধিকার মিত্র” রীতা দাস দত্তের মাধ্যমে জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুক্তি সরকারের কাছে রুমা লিখিত আবেদন জানান। রুমার লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে রুজু হয় প্রি লিটিগেশন মামলা। মীমাংসার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের জন্য ডেকে পাঠানো হয় ভাসুরকে। প্রথম শুনানিতেই বিচারকের উপস্থিতিতে ভাসুর মৃত্যু সার্টিফিকেট রুমাকে দিয়ে দেন।
রুমা শাশুড়ির মৃত্যু সার্টিফিকেট পেয়ে গেলেও বিচারকের কাছে অনুরোধ জানান, আমি একজন মহিলা। আমার পায়ের সমস্যা রয়েছে। পোস্ট অফিস সম্বন্ধে আমার কোনো ধারণা নেই। আপনার কাছে আমার অনুরোধ, আমি যাতে টাকা হাতে পাই তার সমস্ত ব্যবস্থা করে দিন। রুমার অনুরোধে বিচারক “অধিকার মিত্র” রীতাকে নির্দেশ দেন পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটি দ্রুত মেটানোর জন্য।
রুমা শুক্রবার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ২৪২০৩ টাকা পেয়ে যান। আজ বুধবার ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের অফিসে এসে সচিব তথা বিচারক সুক্তি সরকারকে ধন্যবাদ জানান রুমাদেবী। তিনি বলেন, মেয়ের বিয়ে নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। এই টাকা হাতে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। গ্রামের কিছুজন আমাকে অধিকার মিত্র রীতার কথা বলেন। আমার ছয় বছরের সমস্যার সমাধানে জন্য অভিযোগ জানানোর তিন মাসের মধ্যেই বিনামূল্যে সমস্যার সমাধান হলো। এখন নিশ্চিন্তে মেয়ের বিয়ে দিতে পারবো।