পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ৯ ফেব্রুয়ারি: এবার লোধা-শবর পাড়ায় গ্রামবাসীদের সঙ্গে মাটিতে বসেই তাদের সমস্যার কথা শুনলেন জেলাশাসক সহ জেলার অন্যান্য আধিকারিকরা। গ্রামবাসীদের কাছে এই ধরনের অভিজ্ঞতা এই প্রথম। বৃহস্পতিবার সকালে ঝাড়গ্রাম সদর গ্রামীণ ব্লকে রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত লালবাজার (খোয়াব গাঁ) গ্রামে সমস্যা সমাধান জনসংযোগ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এদিনের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়ালা, অতিরিক্ত জেলাশাসক গোবিন্দ দত্ত, মহকুমা শাসক শুভ্রজিৎ গুপ্ত, ঝাড়গ্রামের বিডিও জয় আমোদ সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
এদিন লালবাজার গ্রামে পৌঁছেই লোধা-শবর পরিবার গুলির বাড়িতে যান জেলাশাসক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। খোঁজখবর নেন তারা সরকারি পরিষেবা ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না? রেশন কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড রয়েছে কি না? সময় মত রেশন পরিষেবা, লক্ষ্মীর ভান্ডার, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন কি না? গ্রামে এক গৃহবধূ বিদেশি মল্লিককে জেলাশাসক জিজ্ঞাসা করেন বাড়িতে পাকা শৌচাগার রয়েছে? উত্তরে গৃহবধূ জানান না, নেই। তখন জেলাশাসক বলেন, সরকার থেকে বারো হাজার টাকা দেওয়া হবে। আপনারা শৌচাগার তৈরি করবেন। হাসিমুখে গৃবধূ উত্তর দেয়। হ্যাঁ তৈরি করবো। তারপরেই গ্রামবাসীদের ডোকরা তৈরির কাজ ঘুরে দেখেন মহকুমা শাসক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। পুরো গ্রাম ঘুরে দেখার পর গ্রামের মধ্যে একজনের বাড়ির উঠোনে গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে মাটিতেই ত্রিপলে বসে পড়েন জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও বিডিও। তারা গ্রামবাসীদের সমস্যার কথা শোনেন।
ষষ্ঠীচরণ আহির নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ঝাড়গ্রাম শহর থেকে আমাদের গ্রামে আসার সহজ রাস্তাটির উপর পুলিশ লাইন তৈরি হয়েছে। তাই আমাদের অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে হয়, খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিকল্প রাস্তা তৈরি করে দিলে খুবই ভালো হয়। উত্তরে জেলা শাসক বলেন, ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে একটি রাস্তা আপনাদের গ্রামের দিকে আসছে কিন্তু তার উপর কিছু ব্যক্তিগত জায়গা রয়েছে। ব্যক্তিগত জায়গা সরকারকে দানপত্র করলেই আমরা নতুন পিঠ বা ঢালাই রাস্তা তৈরি করে দেবো। জোৎস্না আহির নামে এক মহিলা বলেন, “আমাদের গ্রামের দুটি সাবমারসিবল জলের পাম্প রয়েছে, কিন্ত অনেক দিন থেকেই খারাপ, জল পড়ে
না।” জেলাশাসককে বলার পরেই জেলা শাসক সেখান থেকেই তৎক্ষনাৎ পিএইচই দপ্তরে ফোন করে বলেন আজকের মধ্যেই জলের সমস্যার সমাধানের জন্য।
জেলাশাসক সুনীল আগরওয়ালা বলেন, “লালবাজার গ্রামে আজ সমস্যা সমাধান, জনসংযোগ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে আমরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে বসে তাদের সমস্যার কথা শুনলাম। তারা সরকারি কী কী পরিষেবা পাচ্ছেন এবং এখনো কোন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন সেই সমস্ত বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। এলাকার মানুষজন রাস্তার কথা জানিয়েছেন। জায়গা পেলে আমরা বিকল্প রাস্তা তৈরি করে দেবো এবং জলের সমস্যা কোথায় ইতিমধ্যেই পিএইচই দপ্তরকে জানিয়ে দিয়েছি আজ বা কালকের মধ্যেই কাজ হয়ে যাবে”।