আমাদের ভারত, ২৯ মার্চ: শনিবার সকালে হাওড়ার শিবপুর আইআইটিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতেই মোথাবাড়ি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে একহাত নিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, একশ্রেণির ভোটকে এক জায়গায় করতে জঘন্য পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, মুসলিম ভোটকে পোলারাইজেশন করার টার্গেট নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, আর তাই সংখ্যালঘু মুসলিমদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে দাবি তাঁর। মোথাবাড়ির মতো ঘটনা আগামী দিনে কলকাতা, হাওড়াতে ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।
ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ভারতবর্ষের অস্তিত্ব হিন্দু ছাড়া ভাবা যায় না। নিজের এই দাবির পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণকেও তুলে ধরেছেন তিনি। তাঁর কথায়, হিন্দুত্বের সঙ্গে বিজেপির রাজনৈতিক আদর্শের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা মনে করি এটা শুধু আমাদের নয়, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ আছে। হাজার হাজার বছর ধরে ভারতবর্ষের প্রবাহমান যে জীবনধারা তাকে হিন্দুত্ব বলা হয়। হিন্দুত্ব ছাড়া ভারতের অস্তিত্ব ভাবা যায় না। হিন্দুত্ব মাইনাস ভারতের অর্থ হল পাকিস্তান, নয় তো বাংলাদেশ বা আফগানিস্তান। সেখানে শিক্ষা আছে? বহুত্ববাদ যাকে বলি আমরা তা আছে? ধর্মনিরপেক্ষতা আছে? বিজ্ঞান আছে? নেই, থাকবে না। তাঁর কথায়, ভারতে হিন্দুরা যতদিন থাকবে ততদিন বহুত্ববাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় থাকবে। বৃহত্তর ভারতবর্ষে যেখান থেকে হিন্দুরা সরে গিয়েছে সেখানে এসবের অস্তিত্ব মিটে গিয়েছে।
মোথাবাড়ির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন সংখ্যালঘু ভোটকে একত্রিত করতে, আর তাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মোথাবাড়ির মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাঁর দাবি, হিন্দু ভোট এক নয় এ রাজ্যে। এখানে কেউ সিপিএম, কেউ তৃণমূল, কেউ ধর্মনিরপেক্ষ। রাজ্য বিজেপি সভাপতির মতে, মোথাবাড়ি ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক দল দেখা হয়নি। তাঁর আশঙ্কা, আপনি উট পাখির মতো যতই বালিতে মাথা গুঁজে থাকুন, এই ভয়ঙ্কর ঘটনা আগামী দিনে কলকাতা ও হাওড়াতেও হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর লন্ডন সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, প্রথমে শুনেছিলাম অক্সফোর্ড না হাভার্ড কিন্তু কোন একটা কলেজে ভাষণ দিয়েছেন। শুনেছিলাম শিল্প আনতে গিয়েছেন, কিন্তু ওর সঙ্গে কোনো শিল্পপতিকে দেখলাম না। লন্ডনের রাস্তায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তার পরিবারকে নিয়ে হাঁটছেন, এতো পুরো মিডিয়া শো চলছে। এরপর তিনি প্রশ্ন করেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে লন্ডনের রাস্তায় হাঁটলে শিল্প আসবে কি? আপনি যদি বলেন, ঘুরতে গিয়েছেন তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই। সেখানে আপনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে লন্ডন, প্যারিস যেখানে খুশি যান। আপনার পারিবারিক বন্ধু হতে পারে, কিন্তু আপনি যদি বিনিয়োগ আনতে গিয়ে থাকেন তাহলে নির্দিষ্ট পলিসি থাকা দরকার।