আমাদের ভারত, ২৬ সেপ্টেম্বর: রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা এক রকম নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন। সেই তালিকায় আরো একটি নতুন সংযোজন, উত্তরবঙ্গে ভুয়ো জিএসটি ভাউচারে কোটি কোটি টাকা লুঠ। ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতা বিরাজ ঘোষ ও বিনয় বর্মনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই দু’জন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেছেন সুকান্ত মজুমদার।
বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেন, উত্তরবঙ্গে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে গত দুই তিন বছর ধরে। তাঁর কথায়, কেন্দ্র সরকার কর চুরি আটকাতে জিএসটি চালু করেছিল। জিএসটি চালু হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই উত্তরবঙ্গে এই নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি শুরু হয়েছে। সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন, উত্তরবঙ্গে যত গাড়ি ঢোকে সেটা আলকাতরা থেকে গুটকা সবার থেকে ভুয়ো জিএসটির ভাউচার বানিয়ে টাকা তোলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। মানুষের কোটি কোটি টাকা এভাবেই লুট হচ্ছে প্রতিদিন। এর সঙ্গে মূলত যে দু’জন ব্যক্তি যুক্ত রয়েছেন। তারা হলেন বিরাজ ঘোষ ও বিনয় বর্মন বলে দাবি করেছেন সুকান্তবাবু। এই দু’জন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা এবং শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেও জানান তিনি। বিরাজ ঘোষের স্ত্রী আবার মাটিগাড়াতে রাজ্যে জিএসটি অফিসার হিসেবে কর্মরত বলেও জানিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।
তাঁর আরও দাবি, একাধিক জিনিসপত্রের উপর ভুয়ো জিএসটি চাপিয়ে মানুষের টাকা চুরি হচ্ছে। সেই টাকা ঢুকছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের পকেটে। আর এরফলে তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি বাড়ছে। তাঁর দাবি, তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তির পরিমাণ দেখলেই বোঝা যাবে যে তারা কত টাকা এভাবে চুরি করছে। প্রমাণ হিসেবে সুকান্ত মজুমদার এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ১৪৫টি জমির দলিল দেখান, যার মালিক তৃণমূল নেতা বিরাজ ঘোষ। এর বেশির ভাগ গত তিন বছরে কেনা হয়েছে বলেও জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তাঁর দাবি, রাজ্যের সবচেয়ে বড় ধনী ব্যক্তির কাছেও সম্ভবত এত জমি নেই। তিনি বলেন, শোনা যায় বিরাজ ঘোষ ৪০০-র বেশি জমির মালিক। তার মধ্যে ১৪৫টি জমির দলিল দস্তাবেজ বিজেপি সন্ধান করে মানুষের সামনে তুলে ধরল। সুকান্ত মজুমদারের দাবি, এর মধ্যে বহু আদিবাসী মানুষের জমিও রয়েছে।
সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, এর নেতাদের যদি এতো পরিমাণ সম্পত্তি হয় তাহলে তার মাধ্যমে উপর তলার তৃণমূল নেতারা টাকা কত পাচ্ছেন। তাদের কাছে তাহলে কত টাকা রয়েছে? এই টাকার ভাগ কলকাতার বড় বড় নেতারাও পাচ্ছেন। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের এভাবে প্রতিদিন ১০০ কোটি টাকার মতো লোকশান হচ্ছে। তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর ভাগ পান কিনা তিনি সেটা বলতে পারবেন? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, তিনি এই ঘটনা ও এর সাথে যুক্ত তথ্য ইডির মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানাবেন।