আমাদের ভারত, ২৬ জানুয়ারি: জাতীয় শিক্ষানীতির পর আবারো শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্রের সংঘাত তৈরি হয়েছে। ইউজিসির খসড়া নিয়ে এই সংঘাত শুরু হয়েছে। খসড়ায় একাধিক বিষয়ে আপত্তি আছে রাজ্যের। আর তা নিয়ে সরব হয়েছেন ব্রাত্য বসু। তিনি ইউজিসির বিরুদ্ধে দেশের বহুত্ববাদকে বাদ দেওয়ার অভিযোগে করেছেন। এর পাল্টা দিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, খসড়ায় আপত্তির বিষয়টি পুরোপুরি রাজনৈতিক।
চলতি বছরের শুরুতে ইউজিসির তরফে একটা খসড়া প্রকাশ করা হয়েছিল। সব স্টেক হোল্ডারদের কাছ থেকে সে বিষয়ে মতামত চেয়ে পাঠিয়েছে ইউজিসি। এর জন্য বারো সদস্যের কমিটি তৈরি করেছে রাজ্য। প্রাথমিক পর্যায়ে বেশ কয়েকটি মিটিংও করেন কমিটির সদস্যরা। কেবল মিটিং নয়, ভার্চুয়ালি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই খসড়া নিয়ে চুড়ান্ত রিপোর্ট জমা করার কথা। আর সেখানেই দ্বন্দ্ব।
প্রাথমিকভাবে জানাগেছে, বেশ কিছু বিষয়ে আপত্তি রয়েছে রাজ্যে তৈরি করা কমিটির সদস্যদের। কিন্তু কোন কোন বিষয়ে আপত্তি সেগুলো স্পষ্ট নয়। আগামী বুধবার ফের বৈঠক সেখানে, কোন বিষয়গুলি নিয়ে আপত্তি তা নিয়ে আলোচনা হবে বলে খবর।
তবে ইউজিসির খসড়ায় বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি নিয়ে যারা স্নাতকোত্তর করছেন তারা নিট পরীক্ষা ছাড়া অধ্যাপনা করতে পারবেন। হাতে কলমে অভিজ্ঞতায় জোর দেওয়া হবে। একজন ছাত্রের স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ভিন্ন বিষয় হলে তিনি পিএইচডির বিষয় নিয়ে অধ্যাপনা করতে পারবেন, মাস্টার্স- এর বিষয়ে নয়। অধ্যাপকদের পদোন্নতি নির্ভর করবে সামাজিক কাজ, স্টার্ট আপে অংশগ্রহণ, বেদ- বেদান্ত সহ ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেমে অংশগ্রহণের ওপরে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও উপাচার্য নিয়োগের পদ্ধতিতেও বড় পরিবর্তন আনার কথা ঘোষণা করেছে ইউজিসি। তাতে আচার্য তথা রাজ্যপালের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যা নিয়ে আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার আপত্তি জানিয়ে সরব হয়েছেন। মনে করা হচ্ছে খসড়ার এই বিষয়টি রাজ্যের আপত্তির অন্যতম প্রধান বিষয়।
ব্রাত্য বসু বলেন, “আমাদের অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আপত্তি রয়েছে। ইউজিসি দেশের বহুত্ববাদকে ধ্বংস করতে চাইছে। ইউজিসি প্রায় বিজেপির লাইনে কথা বলছে।
এর জবাবে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রাজ্য সরকারের আপত্তি থাকলে কমিটির মাধ্যমে জানাক না। কোথায় আপত্তি। তারপর ইউজিসি সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও যদি রাজ্য না মানে তাহলে ইউজিসির কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য আশা করবেন না। পুরোটাই রাজনৈতিক স্বার্থে আপত্তি। রাজ্য সরকার তো কলপাড়ের মাসিদের মতো ঝগড়া করছে।