Sukanta, BJP, মোথাবাড়ি যাওয়ার পথে বিরাট বাঁশের ব্যারিকেড করে বাধা, পুলিশকে জিহাদি তিতুমীর বলে আক্রমণ সুকান্তর, বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

আমাদের ভারত, ৩০ মার্চ: তিন দিন ধরে উত্তপ্ত মালদার মোথাবাড়ি। রবিবার সেখানে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে যান রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার মোথাবাড়ি যাবার জন্য মালদায় পৌঁছেছিলেন তিনি। কিন্তু রবিবার সকালে মোথাবাড়ি যাওয়ার মাঝপথে পুলিশ তাঁকে বাধা দেয়। আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে বিরাট ব্যারিকেড করে তাঁর পথ আটকায় পুলিশ। কিন্তু বাধা পেয়ে রাস্তায় বসে পড়েন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি একা যেতে চেয়েছিলাম, তাতে তো কোনো ধারা লঙ্ঘিত হতো না। তবু আমাকে যেতে দেওয়া হলো না। এর বিরুদ্ধে আমরা বড় আন্দোলন করবো। আজই তা ঘোষণা করা হবে।

রবিবার সকালে মোথাবাড়ি যাওয়ার কয়েক কিলোমিটার দূরে সুকান্ত মজুমদারকে আটকে দেয় পুলিশ। সাদুল্লাহপুর নামে ওই এলাকায় এক বিরাট বাঁশের কেল্লা তৈরি করা হয়েছিল মনে হচ্ছিল। বিরাট বাঁশের ব্যারিকেড গড়া হয়েছে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধের জন্য। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব। বিজেপির রাজ্য সভাপতি প্রথম ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেললেও দ্বিতীয় ব্যারিকেডে আটকে দেওয়া হয় তাঁকে। এরপর সেখানে বসে পড়েন তারা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মালদা দক্ষিণের সাংসদ খগেন মুর্মু ও দলীয় কর্মী সমর্থকরা।

সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমি একা যেতে চাইলেও যেতে দেওয়া হয়নি। অথচ এখানকার বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিনের জন্য সব রাস্তা খোলা। পুলিশ তো শাসক দলের হয়ে কাজ করে। এই যে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকানো হল, কী বলবো আর, আমরা তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার কথা জানি। এখানকার পুলিশ জেহাদি তিতুমীর। তাই এভাবে বাঁশের ব্যারিকেড গড়েছে। তবে আমরা এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরো জোরদার করব। আজকেই পরবর্তী আন্দোলনের কথা ঘোষণা করা হবে।

বাধা পেলে আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করবো। হিন্দু সমাজের লোক সবাই তৃণমূলের পুলিশের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। উত্তপ্ত মোথাবাড়িতে যাওয়ার আগে এভাবেই হুঙ্কার দিয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি। একই সঙ্গে ১৪৪ ধারা থাকার পরেও কিভাবে তৃণমূলের বিধায়ক ও লোকজন সেখানে দাপটের সঙ্গে ঘুরছেন সে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপিকে আটকাতেই সেখানে ১৬৩ (আগে ১৪৪ ধারা ছিল) ধারা জারি করা হয়েছে। তিনি বলেন, শুধু বিজেপির জন্য ১৪৪ ধারা কেন থাকবে? নাকি পশ্চিমবঙ্গে শুধু তোষণের জন্য ১৪৪ ধারা তৈরি হয়েছে?

চাপানউতোরের মধ্যে সুকান্ত মজুমদার ঢোকার চেষ্টা করলে তাঁকে আটকে দেয় পুলিশ। বিরাট বাঁশের ব্যারিকেডে আটকে রাস্তায় বসে পড়েন সুকান্ত মজুমদার। রাস্তা থেকে মাইক হাতে তৃণমূল ও পুলিশ প্রশাসনকে তুলোধনা করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “জেলে যেতে হলে জেলে যাবেন, আমার যুব মোর্চার ভাইদের কাছে অনুরোধ করে যাচ্ছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলে তাঁকে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানাবেন। উনি পশ্চিমবঙ্গের যেখানে যাবেন সেখানে আমরা জয় শ্রীরাম বলবো। একই সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পুলিশকে বলছি আপনারা হিন্দুদের সুরক্ষিত করুন। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকেও তীব্র আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, রাজীব কুমার আমার ভাষণ টিভিতে দেখছে। ওনাকে বলে দিতে চাই, বেশি দিন মুখ্যমন্ত্রী আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। আপনাকেও জেলে যেতে হবে। আপনার সময় এসে গিয়েছে।

কটাক্ষ করে সুকান্তো মজুমদার বলেন, পুলিশ যে ব্যারিকেড করেছে মোথাবাড়িতে তা ভাঙ্গা কোনো ব্যাপারই নয়। এখন আমাদের ওর্য়াম আপ চলছে। ক্ষুব্ধ কর্মীদের শান্ত করে ধৈর্য ধরার কথা বলে তিনি বলেন, “আজ আমাদের আটকে দিয়েছেন। তাতে হয়তো আজ সাময়িকভাবে আমাদের লড়াই শেষ হচ্ছে। দু’ মিনিট পেলে আমরা এই ব্যারিকেট ভাঙ্গতে পারতাম। কিন্তু এখন ম্যাচের আগে প্র্যাকটিস ম্যাচ হচ্ছে। যদি ভাঙ্গতে হয় তাহলে নবান্নের সামনের ব্যারিকেড ভাঙ্গবো। তাতে মজা আলাদা।

মোথাবাড়িতে গিয়ে রামনবমীর প্রসঙ্গ টেনে যোগী রাজ্যের উদাহরণ দেন তিনি। বলেন, উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকার রয়েছে। ওখানে রামনবমীর মিছিল যখন হয় তখন মুসলিমরা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ফুল ছেটায়, শরবত খাওয়ায়। অপেক্ষা করুন ২৬ অব্দি। সেই দৃশ্য আপনারাও দেখতে পাবেন। একই সঙ্গে বিরাট উল্লাসের সঙ্গে রাম নবমী পালনের জন্যেও বলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *