পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ৩ এপ্রিল: অভয়ার ন্যায়বিচার, ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করে জেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, জাল ওষুধের কারবার বন্ধ, ১লা এপ্রিল ৭৪৮টি জীবনদায়ী ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা বাতিল, কোতোয়ালি থানায় আন্দোলনকারী গবেষক ছাত্রীদের উপর পুলিশি নির্মম অত্যাচারের বিচার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধ সহ কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম সুনিশ্চিত, জেলার বন্যা প্রতিরোধ ও জলনিকাশি সমস্যার স্থায়ী সমাধান, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু, প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসানো বন্ধ, রাজস্ব বৃদ্ধির অজুহাতে কোথাও নুতন করে মদের দোকান চালু না করা, কাঁথির জুনপুটে মিসাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র বন্ধ সহ হরিপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল প্রভৃতি দাবিতে আজ এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) দলের আহ্বানে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাসকের দপ্তরে আইন অমান্য কর্মসূচিতে দলের ছাত্র- যুব- মহিলা- কর্মী সমর্থক সহ সহস্রাধিক মানুষ সামিল হন।
কর্মসূচির আগে নিমতৌড়ি মোড়ে এক বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা উত্তর ও দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা কমিটির সম্পাদক প্রণব মাইতি, অশোক তরু প্রধান। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দলের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমল সাঁই। পরে অশোক তরু প্রধান, প্রণব মাইতি, জ্ঞানানন্দ রায়, উৎপল প্রধান, সুব্রত দাস, নারায়ণ চন্দ্র নায়ক, তমাল সামন্ত, চিন্ময় ঘোড়ই প্রমুখের নেতৃত্বে আইন অমান্যকারীদের এক সুসজ্জিত মিছিল নিমতৌড়ির বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে জেলা শাসক দপ্তরে আইন অমান্য করতে যান। দুপুর থেকেই জেলা শাসক দপ্তরের মেনগেটে ব্যাপক পুলিশ মোতায়ন করা হয় এবং আইন অমান্যকারীদের জন্য দুটি কর্ডন করা হয়। আইন অমান্যকারীদের মিছিল পুলিশের তৈরি করা ১ম কর্ডন ভেঙ্গে দ্বিতীয় কর্ডন ভাঙ্গতে চাইলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি বেধে যায়। এরপর ১২৩৭ জন আইন অমান্যকারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে একজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দীপক সরকার আইন অমান্যকারীদের ব্যক্তিগত বন্ডে ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
আইন অমান্যের অন্যান্য দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম হলো-
জেলার গেটওয়ে মেচেদা সহ প্রতিটি বাসরুটে রাত ১০টা পর্যন্ত শেষ বাস চালু ও বাসে ভাড়া সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা টাঙিয়ে ওই ভাড়ার বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া বন্ধ, পান-ফুল-লঙ্কা সহ সমস্ত কৃষিপণ্য সংরক্ষণে জেলায় সরকারী উদ্যোগে বহুমুখী হিমঘর এবং গবেষণাগার নির্মাণ, মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্বভবন নির্মাণ করে পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রদান, জেলায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-আইন ও আর্ট কলেজ স্থাপন, হলদিয়া-নন্দীগ্রাম-তেরপেখিয়া-ট্যাংরাখালী-পুরষাঘাট সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে নদীর উপর কংক্রিটের ব্রীজ নির্মাণ,পাঁশকুড়া-তমলুকের ধারিন্দা-মানিকতলা ও তালপুকুরে রেল লাইনের উপর ফ্লাইওভার নির্মাণ ও ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের দেউলিয়া এবং ১১৬বি জাতীয় সড়কে মহাশ্বেতা সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্রসিং-এ ফ্লাইওভার অথবা আন্ডারপাস নির্মাণ প্রভৃতি।
অশোকবাবু ও প্রণববাবু অভিযোগ করে বলেন, জেলার সার্বিক উন্নয়নের উপরোক্ত দাবিগুলি জেলা প্রশাসনকে আমরা বার বার জানালেও ওই দাবিগুলি পূরণে জেলা প্রশাসন এখনো পর্যন্ত কোনো সদর্থক ভূমিকা পালন না করায় আমরা আইন অমান্য কর্মসূচি করতে বাধ্য হয়েছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে আমরা ওই দাবিগুলি পুরণে আরো বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।