Sukanta, BJP, সীতার অপমানে লঙ্কা পুড়ে ছাই হয়েছিল, মানুষের ক্রোধের আগুনে তৃণমূল সরকার শেষ হবে: সুকান্ত মজুমদার

আমাদের ভারত, ১৪ আগস্ট: আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে চিকিৎসা মহলের সঙ্গে সরব সাধারণ মানুষ। সেই প্রতিবাদের বড় রূপ ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে মহিলাদের রাত দখল, রাস্তা দখল কর্মসূচি। চিকিৎসক তরুণীর মৃত্যুর বিচার চয়ে প্রতিবাদে মুখরিত রাজ্য। এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, এই
তৃণমূল সরকার যে জায়গায় যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ হওয়া উচিত। তিনি সীতার অপমানে লঙ্কা পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে কার্যত তৃণমূল সরকারকে হুঁশিয়ার দেন। তিনি বলেন, এর একটা হেস্ত নেস্ত হওয়া উচিত।

সুকান্ত মজুমদার বলেন, প্রতিবাদের রূপ একেক রকম হয়। যে যেভাবে প্রতিবাদ করবে। সেটা মোমবাতিও হতে পারে মশালও হতে পারে। তবে প্রতিবাদ হওয়াটা জরুরি। আমরা দেখেছি মা সীতাকে অপমান করার জন্য লঙ্কা আগুনে পুড়ে ছাড়খার হয়েছিল। সেইরকম এই সরকারও মানুষের ক্রোধাগ্নিতে পুড়ে যাবে।

তাঁর দাবি, রাজ্যের শাসক দল প্রথম থেকেই এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে গেছে। কেন এই চেষ্টা করেছে অপরাধীরা ধরা পড়লে সেটা বোঝা যাবে। তাঁর কটাক্ষ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূলের নেতারা এখন গ্যালারি শো করতে নেমেছেন। যখন দেখেছে বাংলার মহিলারা জেগে উঠেছে এর প্রতিবাদ করছে। সুকান্ত মজুমদার জানান, অনেকে বলছে সবাই মিলে মিছিল করে চলো এগিয়ে নবান্নের দিকে চলে যাই, এই ধরনের আক্রোশ মানুষের মধ্যে আছে। সাধারণ মানুষ এই মুহূর্তে গর্জে উঠেছে বাংলার শাসকের বিরুদ্ধে।

এদিকে তৃণমূল নেতা সুখেন্দু শেখর রায় এই ঘটনার প্রতিবাদে ও রাত দখল কর্মসূচিকে সমর্থন করে অবস্থান কর্মসূচি করছেন। তাঁর এই ভাবনাকে স্বাগত জানিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, একজন সাধারণ, সংবেদনশীল, চেতনাশীল মানুষ হিসেবে যে কারোর এই ঘটনার প্রতিবাদ করা উচিত।

আর জি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের পদত্যাগ আসলে পুরোটাই নাটক করা হয়েছে। ওনাকে বদলি করা হয়েছিল। ওনাকে সরানো যাবে না, যেহেতু ওনার কাছে এমন কোনো তথ্য রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের এবং তার সরকারের ক্ষতি হবে। অতএব বদলি করে দেওয়া হোক ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে। সেখানে গিয়ে সে বহাল তবিয়তে আবার রাজত্ব চালাবে। বিজেপি নেতার দাবি, সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য তাকে দিয়ে নাটক করানো হয় তিনি পদত্যাগ করছেন।

সুকান্ত মজুমদার আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সম্পর্কে বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলেছি যে প্রিন্সিপালকে বদলি করা হলো তার এই ঘটনায় ১০০% ইনভলমেন্ট আছে। পুলিশকেও ইনস্ট্রাকশন দেওয়া ছিল ঘটনাটাকে ধামাচাপা দেওয়ার। কিন্তু যখন ধামাচাপা দেওয়া যায়নি তখন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্যরা বিষয়টিতে মুখ খুলেছে। তার আগে পর্যন্ত সবটাতেই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

বুধবার ছিল কন্যাশ্রী দিবস, এদিন মুখ্যমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন,
কন্যাশ্রীর টাকা দিচ্ছেন ভালো কথা, কিন্তু তার আগে বলবো কন্যাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করুন। আমার ঘরের কন্যাই যদি না বাঁচে তাহলে কন্যাশ্রীর টাকা কাকে দেবেন? আজ যে মহিলা তার একমাত্র মেয়েকে মেডিকেল কলেজে এমডি পড়তে গিয়ে হারালেন তাকে যদি মাসে মাসে কন্যাশ্রীও দেন সেই মায়ের কোলে কি সেই মেয়ে ফেরত আসবে?

এদিকে মহিলাদের রাত দখলের কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ ও মন্ত্রী উদয়ন গুহ। কিন্তু তাদের বক্তব্যকে সমর্থন করেননি আরেক তৃণমূল নেতা সুখেন্দু শেখর রায়। কুনাল ঘোষ ও উদয়ন গুহকে পাল্টা দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “কুনাল ঘোষ এবং উদয়ন গুহ দু’জনেই হচ্ছেন মারাত্মক অসংবেদনশীল মানুষ। এদের রুচি, শিক্ষা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ আছে। উদয়ন গুহ একজন গুন্ডা, স্বাভাবিকভাবে এদের বক্তব্যকে বাংলার মানুষ সমর্থন করে না। কিন্তু
সুখেন্দুবাবু যদি এর প্রতিবাদ করে থাকেন তাহলে আমি বলব ভালো কাজ করেছেন।”

আরজি করের ঘটনার পাল্টায় উন্নাও ও হাথরস নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতারা। এর জবাবে সুকান্ত মজুমদার বলেন, উন্নাওতে যে ঘটনা ঘটেছে তার দোষীদের অ্যারেস্ট করা হয়েছে, তারা শাস্তি পেয়েছেন। হাথরসেও তাই হয়েছে, যারা অপরাধী তাদের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে। কিন্তু তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, একটি রাজ্যের রাজধানীতে, একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে, কলকাতার কেন্দ্র বিন্দুতে অবস্থিত একজন সরকারি কর্মচারী ডাক্তার তথা শিক্ষার্থী অন ডিউটি থাকাকালীন তার রেপ হয়েছে এরকম ঘটনা গত ১০-১৫ বছরের মধ্যে আর আছে?” তাঁর দাবি, এখানে আইন-শৃঙ্খলা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। যার ফলে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা আরও বেশি ভয়ঙ্কর বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *