আমাদের ভারত, ২৭ মে: দেশভাগের আগের রাতেই জঙ্গিদের খতম করে দেওয়া উচিত ছিল। শোনা উচিত ছিল সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল- এর সতর্কবাণী। মঙ্গলবার গুজরাটের গান্ধীনগরে দ্বিতীয় দিনের জনসভা থেকে এমনটাই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মোদী বলেন, দেশভাগের সময় ভারত মাতাকে তিন খন্ডে ভাগ করা হয়েছিল। সেই রাতেই মুজাহিদিনরা কাশ্মীরে জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল। জঙ্গিদের সাহায্য পিওকে দখল করেছিল পাকিস্তান। সেই সময়ই ওদের খতম করে দিলে ৭৫ বছর ধরে এই অশান্তি ভোগ করতে হতো না। সেই রাতে যদি মুজাহিদিনকে নিকেশ করে ফেলা যেতো, সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের কথায় মান্যতা দেওয়া হতো, তবে ৭৫ বছর ধরে এই সন্ত্রাস ছড়ানোর ঘটনা ঘটতো না। আজ পেহেলগাঁও- এর এই নিকৃষ্ট ঘটনা দেখতে হতো না। সর্দার প্যাটেল বলেছিলেন, মুজাহিদিনকে শেষ করে পিওকে দখল না করা পর্যন্ত ভারতীয় সেনাকে থামানো উচিত নয়।
একই সঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল প্রসঙ্গে পাকিস্তানকে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনও পর্যন্ত তো আমরা কিছুই করিনি। সবে মাত্র কিছু ময়লা পরিষ্কার করেছি। তাতেই ওদের ঘাম ছুটেছে। সবে মাত্র বাঁধ সংস্কার করতে শুরু করেছি তাতেই ওখানে বন্যা হয়ে গিয়েছে। তিনি আরো বলেন, সিন্ধু জলচুক্তির সবকিছু খুঁটিয়ে দেখলে জানবেন সেই সময় করা ওই চুক্তি দেশের মানুষের জন্য সুখকর হয়নি। তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী দীর্ঘদিন গেট খোলা হয়নি। ফলে জল ধারণ ক্ষমতা কমেছে বাঁধের। মোদী প্রশ্ন তুলেছেন, ওই নদীর জলের উপর কি ভারতের মানুষের অধিকার নেই?
এদিকে জঙ্গি কার্যক্রম প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনি যতই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হন না কেন, একটা কাঁটা ফুটলেও তা আপনাকে বেদনা দেয়। তাই আমরা অঙ্গীকার করেছি এই কাঁটা উপরে ফেলবই।
একই সঙ্গে মোদী সকলকে অনুরোধ করেন, সকলে বিদেশী বস্তু পরিত্যাগ করে দেশি জিনিস ব্যবহার করা শুরু করলে তবে অপারেশন সিঁদুর সফল হবে।
পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়েই তাদের সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শিশুরা যেন বোঝে তাদের সেনাবাহিনী সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। পাকিস্তানের জনগণ ও যুব সমাজের উচিত দেশকে সন্ত্রাসবাদের রোগ থেকে মুক্ত করতে এগিয়ে আসা।
পাকিস্তানকে আবারো সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে থাকো, রুটি খাও। না হলে আমার গুলি আছে। আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী। যে আমাদের রক্ত ঝরাবে তাকে তার ভাষাতেই জবাব দেওয়া হবে। শান্তি চাইলে সন্ত্রাস ছাড়তে হবে, নচেৎ ভারত জবাব দিতে প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, অপারেশন সিঁদুরের পর প্রথম গুজরাট সফরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার ভদোদড়ায় তাঁর রোড শো’য়ে উপস্থিত ছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশির পরিবার। পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করার জন্য সিঁদুর অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। নিয়মিত সেই অপারেশনের তথ্য তুলে ধরার দায়িত্ব ছিল দুই মহিলা সেনা অফিসারের। তাদের অন্যতম ছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি।