আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৭ ফেব্রুয়ারি: ফের বেসুরো শতাব্দী। আজ ফের জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগলেন। বললেন, “তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদে আমি থাকতে চাইছি না। কারন ওখানে আমার মতামত দেওয়ার কোনও জায়গা নেই। কাজের ক্ষেত্রে আমার কোনও মতামত যদি আলোচনা পর্যায়েই না পৌঁছয়, তাহলে পদ কেন আটকে রাখব?”
দিন দুয়েক ধরেই শতাব্দী রায়ের বেসুর মন্তব্য নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শেষে কুণাল রায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় সুর নরম করেন বীরভূম সাংসদ। শেষে তাঁকে তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতির পদ দেওয়া হয়। বিতর্কের পর আজ সকালে ব্যক্তিগত কারণে রামপুরহাটে আসেন তিনি। তবে তাঁর কাছাকাছি কোন তৃণমূল নেতাকে দেখা যায়নি। কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এক সময় শতাব্দীর ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকলেও এদিন তাঁকেও দেখা যায়নি। এমনকি এনিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে টোটো ধরে কলকাতা যাব বলে বাড়ি ফিরে যান। তবে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাঁর মান অভিমানের কথা খোলাখুলি বলেন শতাব্দী। তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ প্রসঙ্গে প্রথমেই বলেন, “ওখানে আমি দু’বার পদত্যাগ করতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু গ্রহণ করা হয়নি। ওখানে থাকার কোনও মানে হয় না।” তবে, রাজ্য সহ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতজ্ঞতা জানান। তাছাড়া দল যেভাবে তাঁর অভিমান অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়েছে তাতে তিনি কৃতজ্ঞ। শতাব্দী বলেন, “তাঁরা আমার উপর ভরসা রেখেছেন। তাই দলের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি শুধু জেলা নয়, সারা রাজ্যেই দলের হয়ে প্রচার করব।” ববি হাকিমের সঙ্গে কি কোনও কথা হয়েছে? সাংবাদিকদের প্রশ্নে শতাব্দী রায় বলেন, “ববি হাকিমার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। তবে কথা বলা হয়নি। আর ববি হাকিম কি কোনও সমস্যার সমাধান করেছেন? করলে যারা যারা সমস্যার কথা বলছেন সবাই ববিদাকেই বলতে পারেন। তা না হলে যাদের যাদের সমস্যা রয়েছে তারা কোথায় গেলে সমস্যার সমাধান হবে সেটা বললেই হয়!”
ক্ষোভ প্রসঙ্গে সাংসদ বলেন, “দলের বিরুদ্ধে আমার ক্ষোভ নেই। আমার ক্ষোভ কাজের পদ্ধতির উপর। কারন আমি তারকা হয়েই ভোটে লড়তে নেমেছি। আমাকে কেন শুনতে হবে যে আমাকে দেখতে পায় না। এই কথা যেন আমাকে শুনতে না হয়। আমি গ্রামে গ্রামে যেতে চাই। শুধু সাংসদ নয়, আমার একটি তারকা মূল্য রয়েছে। সেই ইমেজেও যেতে পারি। কিন্তু গেলে দলে বিশৃঙ্খলা হবে। কিন্তু যারা সভা পরিচালনা করবে তারা না করলে কিভাবে যাব? আমি দলে বিশৃঙ্খলতা চাই না। আর না ডাকলে সম্মান বিকিয়ে যাব না। তবে বিধানসভা প্রচারে আমাকে ডাকতে হবে না। আমি তো তারকা প্রচারক। শুধু রাজ্যে নয়, রাজ্যের বাইরে যেখানে বাঙালি রয়েছে সেখানেই প্রচারে যাই।”
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ প্রসঙ্গে শতাব্দী বলেন, “দলে যারা যারা সমস্যার কথা বলছেন তা সত্য। সবাই কিন্তু ভয় দেখানো বা ক্ষমতার জন্য বলছে তা নয়। প্রত্যেকের সমস্যা নিঃসন্দেহে আছে। সব ঠিকঠাক থাকলে কেন একজন অহেতুক নিজের দলের বদনাম করবে? দলে যারা অভিযোগ করছেন তাদের সমস্যার কথা শুনে দলের সমাধান করা উচিত।”
পিকের দল পরিচালনার প্রশংসা করেন শতাব্দী। তিনি বলেন, “আমি পিকে’কে সমর্থন করি। ওই সংস্থার সঙ্গে আমার কোনও দ্বন্দ্ব নেই। পিকে আসার পর দলের কর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে, এটা স্বীকার করতে হবে। আগে আমাদের কাছে কোন কর্মসূচি ছিল না। ফলে যে যার মতো কর্মসূচি করত। পিকে দলের কর্মীদের অরগানাইজ করে কাজ করার উৎসাহ জুগিয়েছে। যা দলে আগে ছিল না। তাই পিকে কে সমর্থন যোগ্য।”