কুমারেশ রায়, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ১৭ জানুয়ারি: রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের আহ্বানে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে মেদিনীপুর শহরের গান্ধী মূর্তির পাদদেশে এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, কৃষি নির্ভর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। যে জেলাকে শস্যভূমি হিসাবে ধরা হয়। যেখানে ধান, আলু, পেঁয়াজ, কফি, তিল, সরিষা সহ বিভিন্ন চাষ হয়। কয়েকজন পুজিঁপতিরা তা কেড়ে নেবে তা হতে পারে না। তাই কৃষক বিরোধী কৃষি আইন আমরা মেনে নিতে পারি না। তাই মানুষ যাতে সচেতন হয় তার জন্য আমরা অবরোধের ডাক দিয়েছি। তবে অবরোধের দিনক্ষণ সংগঠনের নেতার সাথে আলোচনা করে ঘোষণা করা হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, এই কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ আন্দোলন চালিয়ে যাবে। সেই সঙ্গে তিনি শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে বলেন, ও দল ছেড়েছে দুঃখ পেয়েছি। ও বাংলার মানুষকে ধোকা দিয়েছে। যিনি সাংসদ হয়েছিলেন, রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন, দলের কোর কমিটির সদস্য ছিলেন, তার কাছ থেকে এই আচরণ বাংলার মানুষ কামনা করে না। ঠিক সময়ে তাকে মানুষ যোগ্য জবাব দেবে। তিনি বলেন, আমি কারো নাম না করে বলি তিনি যে কাজটা করেছেন ভাল কাজ করেননি। সেই সঙ্গে তিনি আব্বাস সিদ্দিকী ও আসাউদ্দিন ওয়েসিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, মেদিনীপুরের মাটি বিপ্লবীদের মাটি। এই মাটি অতি পবিত্র, তারা কোনওদিন অন্যায়কে মেনে নেয়নি।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আব্বাস সিদ্দিকী ও আসাউদ্দিন ওয়েসি ভোটে লড়ার কথা বলেছেন। আমরা কাকে ভোট দেব? উড়ন্ত পাখি কে, না যে আমাদের পাশে থাকে তাকে? এটা হচ্ছে বিজেপির রিমোট। হায়দ্রাবাদের ওয়েসি বিজেপির কাছে লক্ষ্মী। কারণ ওয়েসি না থাকলে বিহারে বিজেপির নেতৃত্বে নিতিশ কুমার ক্ষমতায় আসতে পারতেন না। তাই ওয়েসি ও আব্বাস সিদ্দিকীর সাথে ভোটে লড়াই করার চিন্তা নিয়েছেন। একজন মৌলানা কত টাকা পায়, বড়জোর দশ হাজার টাকা রোজগার করতে পারে, সেখানে একটা বিধানসভা নির্বাচনে ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা খরচা হবে। সেটা কারো বুঝতে অসুবিধা হয়নি, ওদের টাকা দেবে বিজেপি। তার জন্য হিন্দু-মুসলিম ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। বাংলার মানুষকে বিজেপি ভুল বেঝাচ্ছে। তাই হিন্দু মুসলিম ঐক্য জরুরি। যদি হিন্দু-মুসলিম এক হয় তাহলে আগামী দিনে বাংলা থেকে বিজেপিকে উৎখাত করতে এক মুহূর্তও সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, কে এল কে গেল তা বড় কথা নয়, আমাদের একটাই লক্ষ্য বাংলা থেকে বিজেপিকে উৎখাত করা।