পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ জানুয়ারি: অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই উঠছিল ডেবরা ব্লকের লোয়াদা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের আচরণ ও কথাবার্তা নিয়ে। তাঁর অশালীন কথাবার্তা ও গালিগালাজ শুনতে শুনতে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটল বুধবার দুপুরে।
ডেবরা ব্লকের প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ’খানেকের উপর শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল ডেবরা ব্লকের লোয়াদা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয় চত্বর। এদিন শিক্ষক শিক্ষিকারা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁর অপসারণ দাবি করে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। আর এই স্মারকলিপি দেওয়া নিয়ে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর বচসাও হয়। সবশেষে শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাপে তাঁকে কার্যালয়ের বাইরে এসে জমায়েতে উপস্থিত হওয়া শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে ত ভুল স্বীকার পর্যন্ত করতে হয়েছে তাঁকে।
যদিও লোয়াদা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভম সাহা এইসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। কিন্তু শিক্ষক শিক্ষিকাদের অভিযোগ, তিনি গত আড়াই বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রশাসনিক কাজের অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকাদের অপমান করে চলেছেন। তার বিহিত চাইবার জন্য এদিন বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারক লিপি দেওয়া হয়েছে।
ডেবরা ব্লকের রাধামোহনপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের (১১/১) জগদ্দলপুর বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক সৌমেন্দু মিশ্র বললেন, “উনি প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রশাসনিক কাজের অজুহাত দেখিয়ে অশালীন ভাষায় কথাবার্তা ও গালিগালাজ করে চলেছেন দীর্ঘদিন ধরে। এমনকি আমাকেও গত ২৬ ডিসেম্বর গালিগালাজ করেছেন। ওনার এই ভাষা প্রয়োগ আমরা শিক্ষক সমাজ মেনে নিতে পারছি না। আমরা মনে করছি তিনি এই অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। ব্যক্তিগত স্তরে তাঁর এই অশালীন ভাষা প্রয়োগ আর মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। তাই এদিন বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।”
ডেবরা ব্লকের ভরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নোয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পাপিয়া মুখোপাধ্যায় বলেন, “তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শিক্ষক শিক্ষিকাদের অশালীন ভাষা প্রয়োগ করে চলেছেন। এর বিহিত চাইবার জন্য আমরা এইদিন বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। উনি কথা দিয়েছেন আর এরকম আচরণ করবেন না।”
তবে লোয়াদা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভম সাহা বলেন, ”আমার জানা নেই কাকে, কোথায় গালিগালাজ করেছি। তাঁদের অভিযোগ ঠিক নয়। আমি সবসময় স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে চেষ্টা করি।”