আমাদের ভারত, ১৮ আগস্ট: নারী কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য নবান্ন থেকে ঘোষণা করা হয়েছে ১৭ দফা পদক্ষেপ। তার একাংশের প্রকাশ্য বিরোধিতা করে প্রশ্ন তুললেন ‘সাউথ এশিয়ান ওমেন ইন মিডিয়া’-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক স্বাতী ভট্টাচার্য।
একটি নামী দৈনিকের সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট এডিটর এবং নারী-আন্দোলনকারী স্বাতী সামাজিক মাধ্যমে রবিবার লিখেছেন, “নারী কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য নবান্ন থেকে ঘোষণা করা হয়েছে ১৭ দফা পদক্ষেপ। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, এই নির্দেশিকাগুলির একটি হল, ‘যেখানে এবং যত দূর সম্ভব মহিলাদের রাতের শিফট থেকে অব্যহতি দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’ এই প্রস্তাব অপরিণামদর্শী, পশ্চাদমুখী, এবং ক্ষতিকর। দিন ও রাতের যে কোনও সময়ে, রাজ্যের যে কোনও জায়গায়, মেয়েরা যেন নিরাপদে, সসম্মানে কাজ করতে পারে, তা নিশ্চিত করাই সরকারের কর্তব্য। চিকিৎসক, নার্স, আশা কর্মী, গিগ কর্মী, সাংবাদিক, সমাজ কর্মী-সহ নানা পেশায় রাতেও মেয়েদের কাজ করা একান্ত প্রয়োজন। মেয়েদের কাজের সময় সঙ্কীর্ণ করতে চাইলে বহু পেশায় নিযুক্ত মহিলারা কাজ হারাবেন, তাঁদের আয় কমবে। সর্বোপরি, রাতে কাজ করার অধিকার মেয়েদের আছে। দুষ্কৃতী দমনে পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য মেয়েদের অধিকার খণ্ডিত হবে কেন? এই প্রস্তাব নারী অধিকার-বিরোধী।
বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত মহিলাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে গঠিত হয়েছে ‘নারী দিবস উদযাপন মঞ্চ।’ শ্রমজীবী, বেতনজীবী ও ব্যবসায়ী মহিলাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মঞ্চের দাবি, মহিলাদের রাতের শিফট থেকে অব্যহতি দেওয়ার সরকারি প্রস্তাব এখনই প্রত্যাহার করা হোক।” তাঁর পোস্টে সমর্থন জানিয়ে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন বিভিন্ন স্তরের মহিলারা।
প্রসঙ্গত, কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ড তোলপাড় ফেলে দিয়েছে গোটা দেশে। বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে নারী নিরাপত্তা নিয়ে। আর জি কর হাসপাতালের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই তড়িঘড়ি নারী সুরক্ষায় বড়সড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য প্রশাসন। শনিবার নবান্নে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশে রাজ্য সরকারের তরফে চালু হল ‘রাত্তিরের সাথী’ নামে নয়া প্রকল্প। সন্ধেবেলা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই খবর শুনিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।