আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ৬ ফেব্রুয়ারি: সকাল থেকেই উত্তপ্ত এলাকা। বার বার বিক্ষোভের মুখে পড়ে মাঝ পথে বন্ধ ভূমি পুজো। আদিবাসীদের বাধায় কয়লা উত্তোলন না করেই ফিরতে হল প্রশাসনকে। বৃহস্পতিবার এমনই ছবি ধরা পড়ল বীরভূমের দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি এলাকায়।
বুধবার কলকাতার শিল্প সম্মেলন থেকে বীরভূমের দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলনের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো বৃহস্পতিবার জেলা শাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ, রাজ্য সভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম এলাকায় যান। সঙ্গে ছিল প্রচুর পুলিশ। দুপুর থেকে চাঁদা গ্রামের খাস জমিতে শুরু হয় ভূমি পুজো। আধঘণ্টা পর আদিবাসীদের একাংশের বাধায় পুজো বন্ধ করে দিতে হয়। এমনকি কয়লা উত্তোলনের যন্ত্রাংশ ও কয়লা বোঝাই করতে আসা গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে প্রশাসন।
পুরোহিত সন্তু চটট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি জানতাম না কোথায় পুজো করতে হবে। আমাকে বলা হয় শোঁতসালে পুজো হবে। পরে দেখলাম চাঁদা গ্রামে নিয়ে এসে পুজো করানো হচ্ছে। কিসের জন্য পুজো করা হচ্ছে সেটাও জানানো হয়নি। পুজো কিছুক্ষণ চলার পর আদিবাসীরা এসে বলেন পুজো বন্ধ করতে হবে। তারা বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর পুজো হবে। ফলে আদিবাসীদের বাধায় মাঝপথে পুজো বন্ধ করতে হলো। হোমযজ্ঞ হলে পুজো সম্পূর্ণ হত”।
চাঁদা গ্রামের বাসিন্দা পদ্মা বিত্তার, মিতালী দলুইরা বলেন, “আমরা সরকারি জমিতে বসবাস করি। আমরা ভূমিহীন, দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছি। কয়লা উত্তোলন হলে আমরা থাকব কোথায়? আমাদের কাজ দিতে হবে। থাকতে দিতে হবে”।
সিউড়ি ভারত জাকাত মাঝি পরগণা মহলের নেতা লক্ষ্মীরাম হেমরম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কিছুটা তাড়াহুড়ো করলেন। যে এলাকায় খনন কাজ শুরু করা হবে সেই এলাকার সবাইকে চাকরি এবং বাসস্থান দিয়ে কাজ শুরু করলে ভালো হত। অনেকের এখনও কাজ হয়নি। কিছু কিছু কাগজের জন্য চাকরি পাননি। ফলে সকলকে চাকরি দেওয়া হোক। সবার জমি আগে নেওয়া হোক। তারপর কাজ শুরু করলে ভালো হয়”।
জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, “পুজো হয়েছে। কয়লা উত্তোলনের যন্ত্রাংশ চালানো হয়েছে। বলা যেতে পারে আজ আমাদের আনন্দের দিন।”