monks, Kolkata, মমতার মন্তব্যের প্রতিবাদ, গেরুয়া বসনে খালি পায়ে সাধুরা নামলেন কলকাতার তপ্ত রাজপথে

আমাদের ভারত, ২৪ মে: কলকাতা আজ এক অন্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলো। যে ভারত সেবাশ্রমের সাধুদের বারবার দুর্গত এলাকায় ত্রাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে সেই সাধুদের দেখা গেল আজ প্রতিবাদ মিছিলে। গেরুয়া বসনে, খালি পায়ে সাধু- সন্ন্যাসীরা আজ নামলেন কলকাতার তপ্ত রাজপথে।

মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতায় আজ প্রতিবাদে সামিল হলেন সাধু সন্ন্যাসীরা। বঙ্গীয় সন্ন্যাসী সমাজের উদ্যোগে মিছিল ছিল আজ তিলোত্তমায়।

সাধুরা বাগবাজার থেকে হেঁটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ির সামনে এসে জড়ো হন। বিবেকানন্দ রোড ও বিধান স্মরণীর সংযোগস্থলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের ব্যাপক সমালোচনা করে অবিলম্বে তার ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান সন্ন্যাসীরা। মুখ্যমন্ত্রী সাধুদের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেছেন, তাই তাকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে সোচ্চার হন তারা।

যার নাম নিয়ে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী সেই কার্তিক মহারাজ মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবং মুখ্যমন্ত্রীকে আজ তোপ দাগেন। কার্তিক মহারাজ বলেন, “আপনি মুখ্যমন্ত্রী, আপনি পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট নিন। কোন বুথে গিয়ে আমাদের কেউ কাউকে বলেছেন, যে আপনি তৃণমূলের বেরিয়ে যান। এমন একটি প্রমাণ দিন।” তিনি আরো বলেন, “ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন সম্পর্কে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে প্রধান মন্ত্রীও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। জাত পাতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই এই মিছিলে এসেছেন।”

বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সংঘ আশ্রমে হামলা হতে পারে আশঙ্কা করে কলকাতা হাইকোর্টে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন কার্তিক মহারাজ। তা নিয়ে তিনি বলেন, “বাংলায় তৃণমূলের রাজত্ব। আর বাংলারই আর এক তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর প্রকাশ্য জনসভায় বলছেন আমরা এখানে ৭০ শতাংশ, হিন্দুরা ৩০ শতাংশ। হিন্দুদের ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেব। আর মুখ্যমন্ত্রী আমায় নিয়ে যে মন্তব্য করছেন তা সর্বৈব মিথ্যা। “তিনি আরো যোগ করেন, “আজ ধর্ম সঙ্কটে। সাধু সন্তরা রাজপথে নেমে এসেছেন। হাজার হাজার মানুষ সাধু সন্তদের যেভাবে সম্মান দেখিয়েছে তাতে আমরা চির কৃতজ্ঞ।”

মমতার সমালোচনার পাশাপাশি কার্তিক মহারাজ প্রশংসা করেছেন নরেন্দ্র মোদীর। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বিজেপির নন, তিনি ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী। আমাদের বহু সৌভাগ্য বলে এমন একজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি। এ কথা বলব না? এ কথা দ্বিধাহীন ভাবে মুক্ত কণ্ঠে বলবো।” পূর্ণদাস বাউল বলেন, “হিন্দুদের ওপর যে ধর্ম প্রচারে বাধা এসেছে এটা আমায় কষ্ট দিয়েছে।”

প্রসঙ্গত, গত শনিবার হুগলির একটি নির্বাচনী জনসভায় কার্তিক মহারাজের নাম করে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন,
“সব সাধু সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান। এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন, আমি শুনেছি অনেকদিন ধরে কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার তালিকায় তারা দীর্ঘদিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। কারণ সে ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশের সর্বনাশ করছে।” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর থেকে তুঙ্গে ওঠে বিতর্ক। তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *