আমাদের ভারত, ২ মার্চ: প্রধানমন্ত্রী রাজধর্ম শেখানোর চেষ্টা করেছেন। এখন ছাত্রীর বুদ্ধিমত্তা যদি কম হয় তাহলে আর কি করা যাবে। শুক্রবার মোদী মমতার বৈঠক সম্পর্কে কৃষ্ণনগরের সভার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা বৈঠকের পর এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, কিছু নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার কৃষ্ণনগরে সভার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সভার শেষে মোদী মঞ্চ থেকে নেমে পিছনে তার বিশ্রামের জন্য তৈরি ঘরে যান। সেখানেই সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারী তাঁর সঙ্গে প্রায় ১৬ মিনিট বৈঠক করেন। সেখানে অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হওয়ার সাথে সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজভবনে মমতার সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে সেটাও জানতে চান। সুকান্তবাবু জানান, মমতার সঙ্গে মোদীর রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা হয়নি। প্রসঙ্গত শুক্রবার সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে একই কথা বলেছিলেন মমতাও। তিনি বলেছিলেন, রাজনীতি কম, গল্প হয়েছে বেশি। এদিকে মোদীও শনিবার তাঁর দলের রাজ্য নেতাদের জানিয়েছেন, রাজনীতির কথা তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে হয়নি।
শুক্রবার আরামবাগের সভার জমায়েতের তুলনায় কৃষ্ণনগরের জমায়েত বেশি ভালো হয়েছে। কৃষ্ণনগরে এই বিরাট জন সমাগম দেখে খুশি হয়েছেন মোদীও। কারণ মঞ্চ থেকে মোদী নিজে সেটা উল্লেখ করেছেন। ভিড় সামলাতে তিনিও বক্তৃতা থামিয়ে শান্ত হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন জনতাকে।
সভার শেষে শুরু হয় সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠক। মিনিট ১৫-র বৈঠকে মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ ছাড়া আরো কিছু আর্জি জানান সুকান্তরা।প্রধানমন্ত্রীকে শুধু তৃণমূল নেতা মন্ত্রিদেরই নন, রাজ্যের বেশ কয়েকজন পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তা দুর্নীতি সঙ্গে যুক্ত বলে তাঁরা জানান। এদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের তরফে পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। পুলিশ এবং প্রশাসনের কয়েকজনের নাম করেই অভিযোগ জানানো হয় বলে খবর। আমলারা শাসক দল তৃণমূলের ক্যাডারের মতো কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেন সুকান্তবাবুরা। আইএএস এবং আইপিএসরা যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে চাকরি করেন তাই বিভিন্ন দুর্নীতিতে তাদের যোগের বিষয়ে তদন্ত করানোরও দাবি জানানো হয়। তবে এর পাল্টায় মোদী কি বলেছেন তা জানা যায়নি।
মোদী এই বৈঠকের ছবি প্রকাশ করেছেন তার এক্স হ্যান্ডেলে। সেখানে বাংলার বিজেপি কর্মীদের সাহসের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আমলাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি অবশ্যই এই প্রথম যে বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন তা নয়, শুভেন্দু অধিকারী এর আগে অনেকবারই এই ধরনের দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি সুকান্ত মজুমদারের গলাতেও ওই একই কথা শোনা গেছে। এবার প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে তাঁকেও একই অভিযোগ করেছেন সুকান্ত, শুভেন্দুরা। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে গোটা
রাজ্যজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। মোট ৩০ থেকে ৩৫টি লোকসভা কেন্দ্রেই একই পরিবেশ রয়েছে। সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকের পরেই তিনি ডেকে নেন বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকেও।