সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৫ জুন: দীর্ঘ চার বছর আইনি লড়াইয়ের পর শিশু পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত বাঁকুড়া জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া বেকসুর খালাস হলেন। তাঁকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করেন বাঁকুড়া জেলা আদালতের অতিরিক্ত সেশন জজ দেবকুমার গোস্বামী।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষের আইনজীবী তাপস চৌধুরীর সহকারী শুভেন্দু গুঁই জানান, শিশু পাচারের অভিযোগে চার বছর আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন বাঁকুড়ার কালপাথর এলাকার জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের তৎকালীন অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া। গত ২০২১ সালের ১৮ জুলাই বাঁকুড়ার জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া সহ সাত জনকে শিশু পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা সহ ৩ জন মহিলাও ছিলেন। ধৃতদের কাছ থেকে মোট ৫ জন শিশু উদ্ধার হয় বলে দাবি করেছিল পুলিশ। এই ঘটনাকে ঘিরে সেই সময় উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। এই অভিযোগ সামনে আসতেই তৎকালীন অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে সাসপেন্ড করে জহর নবোদয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের মাঝে তৎকালীন অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে বাদ দিয়ে বাকি সকলেই জামিনে মুক্ত হন। গত ৪ বছর ধরে জেলে থেকে আইনি লড়াই চালিয়ে যান ধৃত কমল কুমার রাজোরিয়া। বিচার চলাকালীন বিভিন্ন ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
শেষ পর্যন্ত বুধবার কমল কুমার রাজোরিয়াকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করে আদালত। বাঁকুড়া জেলা আদালত তাকে বেকসুর খালাসের রায় দেয়। আদালতের রায় ঘোষণার পর প্রাক্তন অধ্যক্ষ দাবি করেন, চাপের মুখে পড়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল সত্য প্রকাশিত হবেই। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হয়েছে। তিনি বলেন, জেলার শিক্ষার মানোন্নয়নে আমি মনোনিবেশ করেছিলাম।এটাই ছিল আমার ধ্যান- জ্ঞান। আদালতের রায়ে অবশেষে প্রাক্তন অধ্যক্ষ বেকসুর খালাস হওয়ায় খুশি তার পরিবারও।
প্রাক্তন অধ্যক্ষের আইনজীবীর দাবি, ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় ৪ বছর কারাবাস করতে হয়েছে প্রাক্তন অধ্যক্ষকে। এজন্য মানহানির মামলা করা হবে কিনা সে বিষয়ে ভেবে দেখা হবে। বিজেপির দাবি, জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের মতো একটি নামী বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষকে ষড়যন্ত্র করে এভাবে ফাঁসিয়েছিল রাজ্যের শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্ব।