সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১৬ ডিসেম্বর: হাসপাতাল চত্বরে বর্জ্য ফেলছে বনগাঁ পৌরসভা। আর এর দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়েছে রোগী সহ পথচারীদের। বেড়েছে মাছির উপদ্রব। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে পৌরসভার বর্জ্য, প্রাণীর মরদেহ ছাড়াও নানা ধরনের আবর্জনা ফেলাকে নির্বুদ্ধিতা বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা সহ রোগীর পরিজনেরা। এছাড়াও হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্র বিকল থাকায় সেই সব পরীক্ষা বন্ধ আছে, বিভিন্ন রোগের চিকিৎসক নেই। ১১ দফা দাবি নিয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিলেন বনগাঁর নাগরিক সমাজ।
আজ পৌরসভার বর্জ্য ফেলার স্থান বনগাঁ হাসপাতাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পৌরসভার ভ্যানে করে বর্জ্য নিয়ে এসে হাসপাতাল চত্বরে ফেলা হচ্ছে। এতে রোগী-সহ এলাকাবাসীর জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। ময়লার স্তূপের প্রায় ১০ গজের মধ্যে রোগীর রান্না ঘর। ফলে মাছির উপদ্রব, সেই মাছি পরছে রোগীদের খাবারে। এদিন বর্জ্য ফেলা কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান, পৌরসভার চেয়ারম্যানের নির্দেশে এই বর্জ্য ফেলা হয়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি হার্টের রোগী, বয়স ৭০ পার হয়েছে। হাসপাতালে ঢোকা দায়। আশপাশের বাড়ির কেউ ঠিকমতো খেতে বসতে পারি না। ছেলে- মেয়েদের জানালা- দরজা বন্ধ করে পড়াশোনা করতে হয়।
এক রোগীর আত্মীয় মিনতি রায় বলেন, আমার বাবা দীর্ঘ দিন ধরে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রতিদিন দু’বেলা হাসপাতালে আসতে হয়, এই দুর্গন্ধের জন্য হাসপাতাল থেকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা করছি।
জানা গেছে, স্থানীয়রা বারবার অভিযোগ করার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে বনগাঁ পৌরসভার পৌরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, এই ব্যাপারে আমি কোনো বক্তব্য দেব না, আপনার যা ইচ্ছে তাই লিখুন।
নাগরিক সমাজের সদস্য অনাথ বন্ধু ঘোষ, প্রদীপ সরকার, বাপি সমাদ্দাররা সোমবার সকালে সুপারের ঘরে যান। সেখানে তাঁরা ১১ দফা দাবি নিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। তাঁরা বলেন, বনগাঁ হাসপাতাল নামেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এই শহরে প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষের বাস। রাজ্য সরকার এই হাসপাতালকে সুপার স্পেশালিটি নাম দিলেও নেই কোনো ক্যাথল্যাব, কার্ডিওলজি বিভাগ। হাসপাতালে দালাল চক্র, চিকিৎসার পরিষেবা নেই বললেই চলে। আমাদের ১১ দফা দাবি কার্যকর না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো।