আমাদের ভারত, ২৭ মার্চ: বাংলার একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ইডি যে টাকা উদ্ধার করেছে সেই টাকা গরিবদের মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী। লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই প্রতিশ্রুতি সাড়া ফেলতে শুরু করেছে। বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রর পর কৃষ্ণনগরের দলীয় প্রার্থী রাজ মাতা অমৃতা রায়কে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইডির উদ্ধার করা দুর্নীতির টাকা গরিব, বঞ্চিতদের ফেরত দেওয়া হবে।
বাংলায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর টাকা উদ্ধার করেছে ইডি। নির্বাচনী প্রস্তুতির মধ্যেই সেই টাকা রাজ্যের বঞ্চিতদের ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রর পর, কৃষ্ণনগরের দলীয় প্রার্থী তথা রাজমাতা অমৃতা রায়কে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই ফোনালাপে মোদী বলেন, ইডির উদ্ধার করা দুর্নীতির টাকা ফেরত দোওয়া হবে গরিব বঞ্চিতদের মধ্যে। বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য তিনি নিজে কাজ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন যাতে এই টাকা গরিবদের ফেরত দেওয়া যায়। বাংলায় একাধিক দুর্নীতি কান্ডে এখনো পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এই টাকা সাধারণ মানুষের টাকা।
কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের সঙ্গে পাঁচ মিনিট ফোনে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, ইডির বাজেয়াপ্ত করা অর্থ গরিব বঞ্চিতদের ফেরতের চেষ্টা করবেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে কৃষ্ণনগরের রাজমাতা অমৃতাকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাতে নরেন্দ্র মোদী বলেন, বাংলায় ইডি যে অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছে, সেটা যাতে গরিব বঞ্চিতদের কাছে যায় তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি কাজ করছেন। এর জন্য আইনি বিকল্প কী কী রয়েছে তা তিনি দেখছেন।
বিজেপি প্রার্থীকে ফোনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে বিজেপি দেশে দুর্নীতিকে গোড়া থেকে উপরে ফেলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্যদিকে সমস্ত দুর্নীতিবাজ একে অপরকে বাঁচাতে এক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণনগরের প্রার্থীর প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবে।
লোকসভা ভোটের আগে অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ইডি সিবিআই সহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির সক্রিয়তা নিয়ে সরব বিরোধীরা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনরা ওই অভিযানের নেপথ্যে বিজেপির ষড়যন্ত্রের দিকে আঙুল তোলেন।
তবে মোদীর জমানায় ইডি যে কতটা কাজ করেছে তার খতিয়ান দিতে গিয়ে সংসদে বাংলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। নাম না করে নিশানা দেগেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে ডাই করা টাকার পাহাড়ের দিকে। লোকসভার বাজেট অধিবেশনের জবাবী ভাষণে তার জমানায় সুশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পিএমএলএ’তে আগের চেয়ে দ্বিগুণ মামলা করেছি আমরা। কংগ্রেসের সময় ইডি পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছিল। আমাদের কার্যকালে এক লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আর এরপরই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মোদী বলেছিলেন, “দেশ কা লুটা হুয়া মাল দেনা হি পারেগা।”
কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতাকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে বিজেপি যখন দেশে দুর্নীতিকে গোড়া থেকে উপরে ফেলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, অন্যদিকে সমস্ত দুর্নীতিবাজ একে অপরকে বাঁচাতে এক হয়েছে। তিনি অমৃতার ভোট প্রচার কেমন চলছে জানতে চান। তারপর অমৃতাকে বলেন, “আপনি রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এবং রাজ পরিবারের ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। “সেই সময় অমৃতা রায় অনুযোগ করে বলেন, “কৃষ্ণনগর রাজ পরিবারকে নিয়েও অপপ্রচার করছে ওরা। আমাদের গদ্দার ভাবা হচ্ছে। আমরা এত দান ধ্যান করেছি, সনাতন হিন্দুধর্ম রক্ষা করার চেষ্টা করেছি।” তখন ফোনের অপর প্রান্তে মোদী বলেন, “আমি আইনি পরামর্শ নিচ্ছি। এই যে তিন হাজার কোটি টাকা যা বাজেয়াপ্ত হয়েছে সেগুলো আমি গরিব এবং বঞ্চিতদের ফেরত দিতে চাই।” প্রধানমন্ত্রী রাজমাতাকে আশ্বস্ত করেন, ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করা মানুষ অনেকে উল্টোপাল্টা কথা বলবে, বদনাম করার চেষ্টা করবে। সাড়ে ৩০০ বছরের পুরনো কথা টেনে আনবে। বর্তমান থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করবে, অথচ এরাই আবার রামের প্রসঙ্গে বলবে হাজার বছরের পুরনো ইতিআহাস। এভাবেই মোদী যেমন একদিকে বিরোধীদের কটাক্ষ করেন, তেমন অন্যদিকে বিজেপি জমানার সাফল্য তুলে ধরেন।