আমাদের ভারত, ৭ মে: সন্দেশখালির ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি দাবি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশই এই স্টিং অপারেশন চালিয়েছে। একই সঙ্গে বিজেপির হয়ে উলুবেড়িয়ায় প্রচারে যাওয়া সন্দেশখালির মহিলাদের পুলিশ আটক করার তীব্র প্রতিবাদ করেন তিনি। উলুবেড়িয়ার আইসির বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমাদের কাছে পুরো খবর চলে এসেছে। একজন সাংবাদিককে সামনে বসিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়েন্দারা অপারেশন চালিয়েছে। পুলিশ করিয়েছে। প্রথমে এই ভিডিও পুলিশের হ্যান্ডেল থেকেই পোস্ট হয়।ভিপিএন লাগিয়ে, মাস্কিন করে, যাতে বোঝা না যায় কে এটি পোস্ট করেছে। তদন্ত চলছে। পুলিশের যে অফিসার ও তার দল এটা করেছে তারা কেউ বাঁচবে না, তাদের আমরা জেলে পাঠাবো।”
শনিবার সকালে সন্দেশখালির বিজেপি নেতার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে একবিজেপি নেতাকে বলতে শোনা যায় সন্দেশখালির ওই পুরো ঘটনাই সাজানো। মহিলাদের ধর্ষণের ঘটনাও মিথ্যে। তবে এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি “আমাদের ভারত।” ভাইরাল ভিডিওটিতে যে বিজেপি নেতার স্বীকারোক্তি সামনে এসেছে তাঁর নাম গঙ্গাধর কয়াল। তিনি বিজেপির মন্ডল সভাপতি। ভিডিও সামনে আসার পর তিনি নিজেও সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে ধর্ষণের অভিযোগ করানো হয়েছে। গোটা বিষয়টির জন্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন।
অন্যদিকে বিজেপির হয়ে উলুবেড়িয়ায় প্রচারে যাওয়া সন্দেশখালির মহিলাদের পুলিশ আটক করেছে। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন সুকান্ত মজুমদার। উলুবেড়িয়ার আইসির বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “উলুবেড়িয়া থানার তরফ থেকে গর্হিত অপরাধ করা হয়েছে। সন্দেশখালির মহিলারা যারা ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে উলুবেরিয়ায় গিয়ে প্রচার করছিল তাদের আটক করা হয়। এরা সেই সব মহিলা যাদেরকে প্রধানমন্ত্রী শক্তি স্বরূপা বলেছেন।”
বিজেপি নেতা অভিযোগ করেন, “আজ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে তৃণমূল বড় বড় কথা বলে। আর গণতন্ত্র ছাড়া এত বড় উৎসব লোকসভা ভোট। সেখানে সন্দেশখালির মহিলারা অন্য জায়গায় গিয়ে প্রচার করতে পারে না? ভোটের ৪৮ ঘন্টা আগে তাদেরকে আপনারা চলে যেতে বলতে পারেন, কিন্তু ভোট এখনো বহুদিন বাকি। এটা গর্হিত কাজ করেছেন আইসি।” একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, “এর আগে বেলডাঙ্গা থানার আইসি সাসপেন্ড হয়েছে। অন্যান্য জায়গার আইসিদের ট্রান্সফার করা হয়েছে। এই আইসির ওপরেও আমরা পুরোপুরি নজর রাখছি।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, সন্দেশখালির মহিলাদের এত ভয় কেন? সন্দেশখালির মহিলারা সত্যি কথাটা বলে দেয়, সেই জন্যই কি ভয়? সেটাই দেখা যাচ্ছে।”
চলতি লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রধান ইস্যু সন্দেশখালি। মহিলাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান ও অন্যান্য অনুগামীরা। কিন্তু ভাইরাল ভিডিওকে হাতিয়ার করে তৃণমূল আবার সন্দেশখালিকে পাল্টা ইস্যু করে ময়দানে নেমেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। ভোটের আগে থেকে শুরু হয়ে এখনো পর্যন্ত সন্দেশখালি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এরমধ্যে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার স্টিং অপারেশনটি পুলিশের করানোর পাল্টা দাবিতে নতুন করে তোলপাড় শুরু হলো রাজ্য রাজনীতিতে।