Dilip Ghosh, Mamata, মমতা ব্যানার্জি চিরদিনই মিথ্যা কথা বলেন, নেতাজির সঙ্গে কি পেঁয়াজির তুলনা হয়?: দিলীপ ঘোষ

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ মার্চ: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার খড়্গপুরে মুখ্যমন্ত্রীর লন্ডন সফরকে সামনে রেখে আরজিকর, রাজ্যের শিল্পায়ন, রামনবমী সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
আরজিকর প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, আমি আগেই বলেছিলাম লন্ডনে যাচ্ছেন ভালো কথা, কিন্তু আরজিকর নিয়ে প্রশ্ন করলে কী উত্তর দেবেন সেটাও ঠিক করে যান। কারণ আমরা জানি উনার কাছে ওই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। কারণ, লেনা তো দেনা পড় গেয়া। উনি গেলেন, ব্রিটিশদের এত প্রশংসা করলেন কিন্তু কোনও লাভ হলো না। মমতা ব্যানার্জি ভেবেছিলেন, ব্রিটিশদের প্রশংসা করলে পশ্চিমবাংলায় টাকা চলে আসবে। কিন্তু তাদেরই তো ভাঁড়ে মা ভবানী, তারা কিভাবে পশ্চিমবঙ্গে ইনভেস্ট করবে?

সাংবাদিকরা বলেন, লন্ডনের শিল্প নিয়ে কথা বলার সময় দর্শকরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মিথ্যাবাদী বলেছেন। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, মমতা ব্যানার্জি চিরদিনই মিথ্যা কথা বলে এসেছেন। আমরা মেনে নিই, আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে, কোনও গুরুত্বই দিই না। কিন্তু বিদেশে গিয়ে উল্টোপাল্টা বললে লোকেরা তো হাসাহাসি করবেই। আসলে পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে উনি সর্বত্র লোক হাসাচ্ছেন। গেছেন ভালোয় ভালোয় ফিরে আসুন। আসলে উনি তো গেছেন শান্তি পেতে। দলের মধ্যে এত ঝগড়া অশান্তি চলছে, যা নিয়ে উনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ২৬ পর্যন্ত এই দুশ্চিন্তা তাড়া করে বেড়াবে। তাই আমি বলি, বিমানে ওঠার সময় উনি যেন দেখে ওঠেন। কলকাতার বদলে সিঙ্গাপুরে না চলে যান।

এরপর সাংবাদিকেরা বলেন, হিন্দুদের সুরক্ষার প্রশ্ন উঠেছিল অক্সফোর্ডে। এ প্রসঙ্গে আপনি কি বলবেন? দিলীপ ঘোষ বলেন, হিন্দু সুরক্ষার প্রশ্নে মমতার কাছে কোনও উত্তর নেই। এ রাজ্যে ধমকে চমকে তিনি চালাচ্ছেন। হাতের বুম ফেলে দিয়ে সাংবাদিকদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ওখানে তো সেটা হবে না। তাই তৈরি হয়ে যাওয়া দরকার ছিল। আসলে মমতা ব্যানার্জি মোদীর মত নেতা হতে চাইছেন। কার সঙ্গে কার তুলনা। নেতাজির সঙ্গে পেঁয়াজির তুলনা করা যায় কি?

রাম নবমীতে আক্রমণ হলে বিজেপির পক্ষ থেকে থানা ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, অবশ্যই থানা ঘেরাও করা হবে। হিন্দুদের কর্মসূচিতে ইট পড়লে, মারধর করা হলে প্রতিবাদ তো হবেই। পরশুদিন মালদহে হিন্দুদের কর্মসূচি হয়েছে। গতকাল সেখানে ঘরবাড়ি, দোকানপাট, মন্দির এমনকি থানাও ভাঙ্গা হয়েছে। তাই এই সরকারের উপর কিভাবে ভরসা করা যায়? এই সরকার সুরক্ষা দিতে পারবে না বলেই তো আমরা প্রস্তুত হয়েই বেরবো। তাই সাধারণ মানুষকে আবেদন জানাবো, রাজনীতির রং দেখবেন না। সবাই মিলে বড় করে রামনবমী উৎসব পালন করুন। যাতে কোনও অস্তিত্বের সংকট না হয়।

দেশের সুরক্ষার ক্ষেত্রে বেড়া করতে জমি দিচ্ছে না তৃণমূল সরকার। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, রাজনাথ সিং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় নবান্নে এসে রাজ্যকে জমি দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তখন মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, আমি জমি দিতে পারব না। আপনি জমি কিনে নিন। অথচ তৃণমূলের লোকেরা এখন রেলের জমি, সরকারের খাস জমি, নদী, খাল বিল সব দখল করে নিচ্ছে। দেশের সুরক্ষার জন্য উনি জমি দিতে পারবেন না। এ ভাবেই দেশবিরোধী শক্তির গতিবিধি বাড়তে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারীরা এ রাজ্যে ভোটার তালিকায় জায়গা পাচ্ছে। আর এটা বন্ধ করতেই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া দরকার। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি সেটা করতে দেবেন না, কারণ বেড়া দেওয়া হয়ে গেলেই তিনি হেরে যাবেন।

অক্সফোর্ডে মমতা ব্যানার্জিকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিল, টাটারা কেন পশ্চিম বাংলা ছেড়ে চলে গেলেন। দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, রাজ্য থেকে টাটাকে তাড়িয়েই পশ্চিমবাংলার মুখ পুড়িয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। সিঙ্গুর থেকে টাটাকে তাড়ানোটাই মমতা ব্যানার্জির গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ টাটাদের কারখানা তাড়ানোর ইস্যুতেই তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন। এখন সারা দেশে নয়, সারা বিশ্ব জেনে গেছে, বাংলা মানে শিল্প চলবে না। শিল্প হলে তা বন্ধ হতে বেশি সময় লাগবে না। কারণ টাটাদের মত কারখানাকে বন্ধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এজন্যই কেউ আসছে না। এখানকার শিল্পপতিরাও অন্য রাজ্যে গিয়ে বিনিয়োগ করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *