আমাদের ভারত, ৮ জানুয়ারি: মালদার তৃণমূল নেতা তথা কাউন্সিলর বাবলা সরকার ওরফে দুলাল সরকারকে খুনের ঘটনায় ম্যারাথন জেরার পর মালদা শহরের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরেক ধৃতের নাম স্বপন শর্মা। এই হত্যা কাণ্ডে এখনো পর্যন্ত সাতজন ধরা পড়লো। কিন্তু এই ঘটনার পেছনে রাজনীতি রয়েছে, নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি গ্রেফতার হবার পর আবারো দাবি করেছেন এটা কোনো রাজনৈতিক খুন নয়। তাঁর দাবি, এই খুন হয়েছে জমি ও ফ্ল্যাটের ব্যবসায় রেষারেষিকে কেন্দ্র করেই।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আজ নন্দু তিওয়ারি (নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি) গ্রেফতার হয়েছে। গত পৌরসভা নির্বাচনে এই নন্দু তিওয়ারি নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল। অনেকে এটাকে রাজনৈতিক খুন বলবেন, কিন্তু আমি এটাকে সম্পূর্ণভাবে পয়সার জন্য খুন এবং জমি নিয়ে খুন বলব।” তিনি বলেন, মালদাতে বাবলা সরকার, নন্দ তিওয়ারি, কৃষ্ণেন্দুবাবু (কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী) একের পর এক নেতা যারা শুধুমাত্র জমির কারবার করেন। কে কোথায় ফ্ল্যাট বিক্রি করবে? কার কোথায় ফ্ল্যাট তৈরি হবে? কে কত ফ্ল্যাটের পার্সেন্টেজ নেবে? কয়েক কোটি টাকার জমি কয়েক লাখে বিক্রি করার ব্যবস্থা। এই নিয়েই লড়াই চলছে। সুকান্ত মজুমদারের দাবি, পুরোটাই হচ্ছে টাকার লড়াই, জমির লড়াই। তাঁর কথায়, যে সমস্ত নেতার নাম বললাম, নামে এবং বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন তারা। তারা ফ্ল্যাট এবং জমির ব্যবসা করে। এখন মালদায় তৃণমূল কংগ্রেস করা মানে জমির ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়া এর বাইরে এদের কোন কাজ নেই।”
প্রসঙ্গত, দিন ছয়েক আগে মালদার ইংরেজবাজার পৌরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল ওরফে বাবলা সরকার খুন হন। তদন্তে নেমে এর আগে ৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার মালদা টাউনের তৃণমূল সভাপতি তথা হিন্দি সেলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও তার দুই ভাই বীরেন্দ্রনাথ, অখিলেশকে দীর্ঘ জেরার পর বুধবার সকালে নরেন্দ্রনাথকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্বপন শর্মা নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে, ২০২২ সালে পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতা বাবলা সরকার অনুগামীদের সঙ্গে নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারির অশান্তি হয়েছিল। কেউ কেউ বলছিল সেই পুরনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড। কিন্তু এখন এই খুনে একের পর এক নয়া মোড় খুলছে।