আমাদের ভারত, ২১ ফেব্রুয়ারি: মহাকুম্ভ আর মৃত্যুকুম্ভ নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে তখন মহাকুম্ভের এক বিরাট সাফল্য উঠে এলো তথ্যে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বিধানসভায় জানিয়েছেন, শুধু ধর্মীয় উৎসবের নিরিখেই নয়, ব্যবসায়িক দিক থেকেও মহাকুম্ভ সফল। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকায় উৎসব রাজ্যের অর্থনীতিতে যুক্ত করেছে তিন লক্ষ কোটি টাকা।
যোগী এই তথ্য প্রকাশ্যে আনার আগেই কান ফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স এই তথ্য সামনে এনেছে। এই উৎসব সংগঠিত করতে খরচ হয়েছে রাজ্য সরকারের ১৫০০ কোটি টাকা। পরিবর্তে রাজ্যের ভান্ডারে ফিরেছে তিন লক্ষ কোটি টাকা। প্রায় দেড় মাস ধরে চলা মহাকুম্ভ উপলক্ষে নজিরবিহীন ব্যবসা হয়েছে। পূর্বাভাস ছিল ২ লক্ষ কোটির ব্যবসা হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে সেই অংক পেরিয়ে তিন লক্ষ কোটিতে গেছে।
অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের তরফে জানানো হয়েছে, শুধু প্রয়াগ রাজেই ব্যবসার অংক পেরতে চলেছে তিন লক্ষ কোটি টাকার গণ্ডি। ছয় সপ্তাহ ধরে এই বিরাট জনসমাগমে স্থানীয় অর্থনীতি উপকৃত হয়েছে। পণ্য পরিষেবা কিনতে প্রয়াগরাজে যত সংখ্যক মানুষ ভিড় করেছেন তা বিশ্বের অন্য কোথাও দেখা যায়নি। ফলে অত্যাবশক পণ্য কিংবা পরিষেবা তো বিকিয়েছে। শুধু মহাকুম্ভ থিমের পেন, জামাকাপড় খাতা, ঘর সাজানোর পণ্য, ক্যালেন্ডার, ব্যাগের মতো সামগ্রী বিক্রি হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকার। পূর্বাভাস ছিল ৪০ কোটি মানুষ আসবেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই ৫৫ কোটির বেশি মানুষ এসে গিয়েছেন আর ব্যবসার অংক তিন লক্ষ কোটি টাকা ছুঁয়েছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি মেলা শেষ হলে এই দুই সংখ্যা যথাক্রমে ৬০ কোটি এবং তিন লক্ষ কোটি টাকা পেরিয়ে যাবে। যা উত্তরপ্রদেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে।
এমনকি এর সুফল পাবে বিহার, উত্তরাখন্ড, দিল্লিও। সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে হোটেল, লজ,রেঁস্তোরাগুলি। এরপর রেল বিমান সংস্থা, পুজোর সামগ্রী, জামাকাপড়, দৈনন্দিন ও ধর্মীয় পণ্য, টেলিকম, বিজ্ঞাপন, হস্তশিল্পজাত জিনিস বিকিয়েছে বিপুল। কয়েক কোটি টাকার গাড়ি কেনাবেচা হয়েছে।
এককথায় মহা কুম্ভের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে গোটা উত্তর প্রদেশে। অযোধ্যা, বারানসি, কাশি পেয়েছে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী। ফলে সেখানেও ব্যবসায়ীদের ঝুলি পড়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার আসন্ন অর্থ বর্ষের বাজেট পেশ করার সময় জানিয়েছে, কুম্ভের জন্যই রাজ্যজুড়ে সড়ক, সেতু, পানীয় জল সহ পরিকাঠামো উন্নয়নে ৭৫০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। ১৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে প্রয়াগরাজে। তার পরিবর্তে রাজ্যের ভাঁড়ারে তিন লক্ষ কোটি টাকা ফেরত এসেছে।