আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ২২ ফেব্রুয়ারি: গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে খুন হলেন তৃণমূল নেতা। রাতে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় হামলা হয় তৃণমূল নেতার উপর। তাঁর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। লোহার রড দিয়ে তাঁকে মারা হয়। মৃত তৃণমূল নেতার নাম শেখ নিয়ামূল।
জানা গিয়েছে, বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডল বনাম ফায়েজুল হক ওরফে কাজল শেখের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। শুক্রবার রাতে নিহত শেখ নিয়ামূল অনুব্রত গোষ্ঠীর উজ্জ্বল কাদেরির লোক হিসাবে পরিচিত। তাঁর বাড়ি কাঁকরতলা থানার বহড়া গ্রামে। অভিযোগ উঠছে, উজ্জ্বল কাদেরী বিরোধী স্বপন সেনের অনুগামী শেখ কালো’র লোকজন নিয়ামূলকে খুন করেছে। ফলে দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব ফের মাথাচাড়া দিল বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
শুক্রবার রাতের ঘটনায় খয়রাশোল ব্লকের কাঁকরতলা থানার বহড়া গ্রামে ফের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। নিয়ামুলের পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাবুইজোর থেকে মোটরবাইকে শেখ নিয়ামূল বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় শেখ কালোর নেতৃত্বে তার লোকজন রড লাঠি নিয়ে বেধড়ক মারধর করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ামূলকে উদ্ধার করে প্রথমে নাকড়াকোন্দা, পরে সিউড়ি হাসপতালে ভর্তি করা হয়। রাতে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়।
উজ্জ্বল কাদেরির গোষ্ঠীর অভিযোগ, শেখ কালোর লোকজন নিয়ামূলকে খুন করেছে। তাদের দাবি, শেখ কালো তৃণমূল করে না। ওরা দুষ্কৃতী। বিজেপির দাবি, শেখ কালো তৃণমূল কর্মী। দুবরাজপুরের বিধায়ক বিজেপির অনুপ সাহা বলেন, “খয়রাশোলে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে খুনোখুনি বাড়ছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এলাকায় আতঙ্কিত মানুষ। পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকায় অশান্তি বাড়ছে।”
প্রসঙ্গত, ১১ ফেব্রুয়ারি খয়রাশোল ব্লকের কাঁকরতলা থানার জামালপুর গ্রামের ডাঙ্গালপাড়া ও বাখোলপাড়ার মধ্যে বালিঘাটের দখল ও টাকার ভাগাভাগি নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গোলমাল বাধে। চলে ব্যাপক বোমাবাজি। বোমাবাজির জেরে উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে ৷ ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ ৷ গ্রেফতার করা হয় কাজল শেখ গোষ্ঠীর স্বপন সেনকে। ওই ঘটনায় পরদিন কাঁকরতলা থানার ওসি পূর্ণেন্দু বিকাশ দাসকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সার্কেল ইন্সপেক্টর শুভাশিস হালদারকে। কিন্তু তারপরও গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামানো যায়নি খয়রাশোলে।