পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ জানুয়ারি: শনিবার রাত থেকেই তাদের ওপরে থাকা সাসপেনশন অর্ডার প্রত্যাহারের দাবি করে ধর্না অবস্থান শুরু করেছে জুনিয়র ডাক্তাররা। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের সামনে ছাত্র- ছাত্রীরা পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসে পড়েছে। শীতের রাতে ঠান্ডা মেঝের ওপর মোটা আসন পেতে, কম্বল জড়িয়ে ধর্নায় বসেছেন তারা। তবে ধর্নায় রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের ছোট্ট একটি অংশ মাত্র। বাকি জুনিয়র থেকে সিনিয়র ডাক্তার সকলেই কাজে যোগ দিয়েছেন হাসপাতালে। তাই মেদিনীপুর হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবায় কোনো খামতি নেই।
আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, ”আমরা সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে এই ধর্না করছি। তবে কোনো কর্মবিরতি করছি না।”
ইতিমধ্যেই সিআইডি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে আরও একজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তার ৭ জন ও সিনিয়র ডাক্তার ৬ জন, সব মিলিয়ে মোট ১৩ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এই ঘটনায়। উপরি পাওনা হিসেবে সিআইডির পক্ষ থেকে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই প্রবল চাপে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের জুনিয়র থেকে সিনিয়র চিকিৎসকরা। এরপরেই জুনিয়র চিকিৎসকরা তাদের উপর থেকে সাসপেনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়ে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপালের মাধ্যমে ন্যাশনাল মেডিকেল কাউন্সিল সহ বিভিন্ন বিভাগীয় দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে শনিবার রাতেই। এরপর রাত দশটা থেকে সেই দাবিতে ধর্না অবস্থান শুরু করছেন তারা মেদিনীপুর মেডিকেলের সামনে।
রবিবারও একই চিত্র। ঠান্ডা মেঝের ওপর মোটা আসন বিছিয়ে জন কুড়ি জুনিয়র ডাক্তার ধর্না অবস্থান করছেন। নিজেদের দাবি সম্বলিত পোস্টাী, প্ল্যাকার্ড নিজেরা হাতে করে লিখে মাঝেমধ্যে স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছে। আর তাদের উপর নজরদারি রেখে সামনেই রয়েছে সংবাদ মাধ্যম। সঙ্গে দরজার বাইরে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ বাহিনী।
আন্দোলনরত এই জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, “এই কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তাররা কোনভাবেই দোষী হতে পারে না। স্যালাইনের ত্রুটির ব্যবস্থা না নিয়ে এই সাসপেন্ড করাটা অন্যায়। আমরা রোগীদের ভালো করার চেষ্টা করেছিলাম। তাই যতক্ষণ না আমাদের অন্যায় ভাবে করা সাসপেনশন প্রত্যাহার হচ্ছে ততক্ষণ আমাদের এই আন্দোলন চলবে। তবে আমরা কর্মবিরতি সেভাবে করছি না। অনেকেই কাজ করছেন। সিনিয়র চিকিৎসকরা কাজ করছেন। জরুরি প্রয়োজনে আমরা এখান থেকে গিয়ে তাদের সহযোগিতা করব।”
তবে রবিবার ছুটির দিন থাকায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আউটডোর বন্ধ থাকলেও এমার্জেন্সি পরিষেবা সহ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সমস্ত পরিষেবা স্বাভাবিক। রোগীরা স্বাভাবিক পরিষেবা পেয়েছেন সকাল থেকেই।