জন্মদিনের প্রাক্কালে নেতাজি রহস্যের উদঘাটনে কেন্দ্রের কাছে লাল ডায়েরি প্রকাশের দাবি জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের

রাজেন রায়, কলকাতা, ২২ জানুয়ারি: ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বীর নায়ক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর অন্তর্ধান সম্পর্কিত সব রহস্য লাল ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ। সেই ডায়েরি এবার প্রকাশ করুক কেন্দ্রীয় সরকার। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনের প্রাক্কালে ১২৫ তম বর্ষের বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন অল ইন্ডিয়া লিগ্যাল এড ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তথা সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়।

শুক্রবার নেতাজির ১২৫ তম জন্ম বার্ষিকীর আগেই এক সাংবাদিক বৈঠকে বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘স্টালিন পুত্রী সয়েটলানা তাঁর বাবার কাছ থেকে নেতাজি সম্পর্কিত সব তথ্য শ্রুতিগোচর করার পর একটি লাল ডায়েরিতে সব লিপিবদ্ধ করে গেছেন। সেখানে নেতাজির রাশিয়ায় থাকা কালীন সব তথ্য লিপি বদ্ধ আছে। কিন্তু তৎকালীন কংগ্রেস সরকার ভারতে সেই ডায়েরি প্রকাশ করতে দেয়নি। আমি চাই সেই ডায়েরি প্রকাশ করে অবিলম্বে নেতাজির সম্পর্কিত সব তথ্য প্রকাশ করা হোক।’

জয়দীপবাবু বলেন, ‘সোয়েটলানা যখন রাশিয়া থেকে পালিয়ে এসে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। সে সময়ে তিনি এক সাংবাদিক বৈঠক করে সব তথ্য উদঘাটন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে বাধা দেন। এক দিনের মধ্যেই তাঁকে ভারত ছাড়তে বাধ্য করেন। যার ফলে তিনি ভারত ছেড়ে তাঁকে লন্ডনে পাড়ি দিতে হয়। আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কে ছেদ পড়বে বলে তাঁকে নেতাজি সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে বাধা দান করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে সোয়েতলানা সেই লাল ডায়েরি লন্ডনের মাটিতে প্রকাশ করেন। যদিও আজ অবধি ভারতের কোনও সরকার সেই তথ্য দেশের মাটিতে প্রকাশ করার সাহস দেখায়নি। কিন্তু এ পর্যন্ত অনেক বছর কেটে গেছে ভারত স্বাধীন হয়েছে। তাই এখন আর সেই ভয় নেই। সে কারনে অবিলম্বে সেই তথ্য প্রকাশ করা হোক। দেশবাসীর জানার অধিকার আছে নেতাজির শেষ পরিণতি সম্পর্কে জানার।’

এদিন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান পরবর্তী সময়ের ওপর লেখা বিশিষ্ট আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের ‘চেকা শেষ উত্তর’ বইটির পঞ্চম সংস্করণ প্রকাশ করা হল। শুক্রবার দুপুরে কলকাতার পিয়ারলেস ইনে এক অনুষ্ঠানে এই বইটি প্রকাশ করা হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ব্রিগেডিয়ার দেবাশীষ দাস, অভিনেত্রী পাপিয়া অধিকারী, আইনজীবী সুরঞ্জন দাশগুপ্ত, আইনজীবী গোরাচাঁদ রায়চৌধুরী, বিশিষ্ট সমাজসেবী দীপ মজুমদার।

নেতাজির ১২৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জয়দীপ মুখোপাধ্যায় আরো বলেন, “প্রাক্তন বিচারপতি মনোজ মুখোপাধ্যায় কমিশনের রিপোর্টে প্রমাণ হয়েছে তাইহুকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি মারা যাননি এবং সহায় কমিশনের রিপোর্ট প্রমাণ করে গুমনামী বাবা নেতাজি নন। তাই ভারত সরকার অবিলম্বে রাশিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচন করুন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *