Jhargram court, ডাইনি সন্দেহে বৌদিকে কুপিয়ে মারায় দেওরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল ঝাড়গ্রাম আদালত

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ২৩ আগস্ট: ডাইনি সন্দেহে নিজের বৌদিকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হলো দেওরের। শুক্রবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম জেলা আদালতের বিচারক কল্লোল চট্টোপাধ্যায় সাজা ঘোষণা করেন। ঝাড়গ্রাম আদালতের সরকারি আইনজীবী সত্যজিৎ সিনহা বলেন, “ডাইনি সন্দেহে নিজের বৌদিকে কুড়ুল দিয়ে খুনের ঘটনায় এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেন জেলা বিচারক কল্লোল চট্টোপাধ্যায়। যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায় আরও ছয় মাস জেলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক”।

জানা গিয়েছে, গোপীবল্লভপুর থানায় ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের ১৭ তারিখ গোপীবল্লভপুর থানার ভাতভাঙ্গা গ্রামের লক্ষ্মী দেহরি নামের এক যুবক লিখিত অভিযোগ জানায়। লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছিলেন, ১৬ তারিখ ওড়িশা রাজ্যের সীমানাবর্তী নুড়িশোল হাটে তার মা সুকুমারী দেহরি শালপাতা বিক্রি করতে যায়। তারপর সেদিন হাট থেকে বাড়ি ফিরেনি। পরের দিন সকালে ভাতভাঙ্গা গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গল থেকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় সুকুমারী দেহরির দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ খুনের ধারা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তৎকালীন গোপীবল্লভপুর থানার তদন্তকারী অফিসার তারকনাথ মন্ডল ভাতভাঙ্গা গ্রাম থেকে পাঁচ দিনের মাথায় সুকুমারী দেহরির দেওর লব ওরফে শম্ভু দেহরিকে গ্রেফতার করে। তারপরেই সামনে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শম্ভু মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তো। শম্ভু মনে করত তার বৌদি সুকুমারী দেহরি ডাইনি বিদ্যা শিখে তাকে অসুস্থ করে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। তাই শম্ভু তার বৌদিকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। শম্ভুকে ঝাড়গ্রাম আদালতে পেশ করলে আদালতের নির্দেশে তখন থেকে জেল হেফাজতে থাকে শম্ভু। ঘটনার দু’মাসের মধ্যেই জুন মাসের ৩০ তারিখ আদালতে চার্জশিট পেশ করে গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ। অক্টোবর মাসের ২৯ তারিখ গঠিত হয় চার্জফ্রেম। সুকুমারী দেহরির পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসী সহ মোট ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার শম্ভুকে দোষী সাব্যস্ত করে ঝাড়গ্রাম জেলা আদালত।

ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন,”প্রায় দু’ বছরের মধ্যেই এক মহিলাকে খুনের ঘটনায় আমরা সাজা করাতে পেরেছি। এটি একটি মহিলার উপর অপরাধ হওয়ায় আমরা অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে প্রকৃত দোষীকে আমরা দোষী সাব্যস্ত করাতে পেরেছি। আগামী দিনে এই ধরনের যে অপরাধগুলি রয়েছে তা আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখবো”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *