প্রধানমন্ত্রীর ডাকা জনতার কারফিউ’য়ে ব্যাপক সাড়া মালদা জেলায়

আমাদের ভারত, মালদা, ২২ মার্চ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা জনতার কারফিউ’য়ে ব্যাপক সাড়া মালদা জেলা জুড়ে। রবিবার সকাল থেকেই ছিল পথঘাট ফাঁকা। দু-একটি যানবাহন চললেও নামমাত্র যাত্রী। রেলস্টেশন চত্বরে জনমানুষের দেখা নেই। ভোরবেলা দুই একজনকে দেখা গেলেও একটু সকাল হতেই পথঘাট থেকে উধাও মানুষজন। হাট-বাজার দোকানপাট বন্ধ। দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ এদিন জনতার কারফিউতে সাড়া দিয়েছে।

মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু বলেন, এর আগেই শপিং মল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাজ্য সরকার নির্দেশিকা জারি করেছে রেস্তোরাঁ, হোটেল, পার্লার, পানশালা সব বন্ধ থাকবে। রবিবার এমনিতেই মালদা শহরের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকে। এদিন আরো বেশি করে বন্ধ ছিল। আমরা চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে সমস্ত ব্যবসায়ী দোকানপাট বন্ধ রেখেছি। বাড়ি থেকে খুব প্রয়োজন না হলে কেউ বেরোয়নি। আমি সারাদিন বাড়িতে টিভি দেখে সময় কাটালাম।

ওয়েস্টবেঙ্গল এক্সপোর্টার কোঅর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, রবিবার দিনটা আমি এমনিই বাড়ি থেকে কম বেরোই। এদিন বেরোনোর কোনও প্রশ্নই ছিল না। সারাদিন পরিবারের সাথে সময় কাটিয়েছি। এই ভাইরাস থেকে মোকাবিলা করার একটাই উপায় সচেতনতা। মাস্ক পড়ুন। বার বার হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে ভাইরাস মুক্ত করার চেষ্টা করছি।পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন সবাইকে ফোন করে এই কথাই বলছি। আমাদের রাজ্য সরকার যথেষ্ট ভালো কাজ করছে।

এদিন কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মীদের পথে ঘাটে দেখা যায়নি। রাজ্যসভায় নির্বাচিত হওয়া সাংসদ তথা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আগেই আমরা দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছি সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি আপাতত বন্ধ রয়েছে। আমি এদিন বাড়িতে পরিবারের সাথে সময় কাটিয়েছি। আমার বিদেশে কিছু বন্ধুবান্ধব আছে। ফোনে তাদের খোঁজখবর নিচ্ছি। বিশ্বজুড়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বিজেপির মালদা জেলার সভাপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র মন্ডল বলেন, আমরা বাড়ি থেকে বেরোইনি। খোঁজখবর নিয়ে যা দেখেছি মালদা জেলা জুড়ে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই জনতা কারফিউ’য়ে অংশগ্রহণ করেছে। বিকেলে ঘন্টা কাঁসর বাজিয়ে যারা এই ভাইরাসের সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে লড়াই করছে ও রোগীদের পরিষেবা দিচ্ছে তাদের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি। দেশের প্রধানমন্ত্রী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হয়তো আগামী দিন এই ধরনের কারফিউয়ের জন্য আমাদের আবার প্রস্তুত থাকতে হবে। সচেতনতার মাধ্যমেই এই ভাইরাসের মোকাবিলা করা যাবে।

অন্যদিকে শনিবার দুবাই থেকে ফেরা মালদা শহরের এক নম্বর কলোনির দুই বাসিন্দাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের দৌলতপুর এলাকা থেকে করোনা সন্দেহে এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই রাস্তায় কড়া পুলিশি নিরাপত্তা ছিল। ইংরেজবাজার থানার আইসি ত্রিগুণা রায়কে শহরের বিভিন্ন জায়গায় টহল দিতে দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *