আমাদের ভারত, ৩০ অক্টোবর: আর জি কর- কান্ড নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তাঁর কথায়, এটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেভেলের নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপার। মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপার। তিনি আর জি কর কাণ্ডে পরিস্থিতি সামলানো নিয়ে এমনই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করছেন এক টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদিকের কাছে। যদিও মদন মিত্রের এই মন্তব্যকে কুনাল ঘোষী মন্তব্য অবান্তর বলেছেন। কিন্তু কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কের দাবি, দলের ভেতর বিভীষণ রয়েছে।
আর জি কর মেডিকেল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বলেন, অভিষেক বোধ হয় অসুস্থ ছিল। শুনেছি অপারেশন করাতে গেছে। অসুস্থ অবস্থায় তো এগুলো পারে না। তাছাড়া যে লেভেলে ব্যাপারটা ছিল সেটা অভিষেকের লেভেলের ব্যাপার ছিল না। সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপার ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপার ছিল। ওখানে তো যুব কংগ্রেসের সমাবেশ করে কিছু করা যেত না। ওখানে যদি ডাক্তারদের পাল্টা একটা যুব কংগ্রেসের সমাবেশ হত সেটা কখনোই ভালো হতো না, ভুল হতো।
মদন মিত্রের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কুণাল ঘোষ বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল একটা পরিবার। নবীন প্রবীণ প্রায় পাঁচটা প্রজন্ম একসঙ্গে লড়ছে।
অন্যদিকে তৃণমূল বহু উত্থান পতনের সাক্ষী। বহুদিনের দলের কর্মী মদন মিত্র দলের একাংশ সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, একটা কথা মনে রাখবেন বিভীষণ না থাকলে কিন্তু রাম রাবণকে মারতে পারতেন না। বিভীষণরা চিরকালই ছিলেন এবং খুব ভালো পজিশনে ছিলেন। রাবণের ভাই। তাকে টিভি চ্যানেলের সংবাদিক প্রশ্ন করেন বিভীষণ কোথায় আছে? উত্তরে মদন মিত্র বলেন, খুঁজলেই পাওয়া যাবে। চালে কাঁকর পাওয়া যায়। অত চালের মধ্যে থেকে কাঁকর বেছে দেয় মেয়েরা, কিন্তু বিভীষণ তো লম্বা-চওড়া পরিষ্কার একটা মানুষের মতো। বিভীষণ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আচরণ লক্ষ্য করলেই বিভীষণ পাবেন। দলেই ষড়যন্ত্রকারী আছে। মদন মিত্র বলেন, সিরাজের সময় জগত শেঠ, উমি চাঁদ যেমন ছিল, তেমন আজও তারা সক্রিয় তৃণমূলের ভেতরে, সিপিএমের ভেতরে বিজেপির ভেতরে, সব কিছুর ভেতরে। একটা সংসারের ভেতরে একটা গ্রুপ থাকেই বিশ্বাসঘাতকতা করাই তাদের কাজ। সব সময় চেষ্টা করে কী করে পার্টিটাকে ক্ষতি করা যায়। এটা তারা বোঝে না পার্টিটার ক্ষতি হচ্ছে।
মদন মিত্র জানান, যদি দলের তরফে সনাক্তকরণ কমিটি করে তাকে সে কমিটির সদস্য করা হয় তাহলে সেখানে তিনি মতামত দেবেন। লিখিতভাবে বলে দেবেন কোথায় কত ফুটোগুলো সিলিং লাগাতে হবে।
এদিকে কুনাল ঘোষ বলেছেন, উনি (মদন মিত্র) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিতভাবে জানিয়ে দিন। কোথায় কোথায় ছিদ্র আছে, কোন কোন পদ্ধতিতে উনি সেলুটেপ দেবেন, নাকি অন্য কোনো পদ্ধতি আছে সিমেন্ট টিমেন্ট দেবেন জানিয়ে দিন।
তবে আর জি কর কাণ্ড নিয়ে আন্দোলন আঁচের মধ্যে মদন মিত্রের এই মন্তব্য যে নতুন বিতর্কের জন্ম দিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।