Sukanta, BJP, তোষণের জন্য হিন্দুদের পবিত্র উৎসবকে অপমান করছেন, অন্য ধর্মের লোক হলে মুখ্যমন্ত্রীকে বাড়ি থেকে বেরতে দিত না: সুকান্ত

আমাদের ভারত, ১৮ ফেব্রুয়ারি: মহাকুম্ভ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। মুখ্যমন্ত্রী মহাকুম্ভকে মৃত্যু কুম্ভ বলার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্য, রাজ্যের বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী।

মহাকুম্ভকে মৃত্যু কুম্ভ বলায় রাজ্য রাজনীতির পারদ তুঙ্গে উঠেছে। বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব একযোগে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। বিধানসভায় মঙ্গলবার মহাকুম্ভকে মৃত্যু কুম্ভ আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় বিজেপি বিধায়করা অধিবেশন কক্ষে ছিলেন না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার বিধানসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী মহাকুম্ভ প্রসঙ্গে বলেন, “মহাকুম্ভ আমি নাই বা বললাম। ওটা এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে। মৃত্যু কূপের মত।”

রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এখন আন্দামান সফরে রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোষণের জন্য, নিজের ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করার জন্য হিন্দুদের এত পবিত্র উৎসবকে মহা কুম্ভের মহা স্নানকে যেভাবে অপমান করছেন, এটা হিন্দু ধর্মের লোকেরা বলে সহ্য করছেন। অন্য ধর্মের লোকেরা হলে মুখ্যমন্ত্রীকে ঘরের বাইরে বেরতে দিত না। তিনি আরো বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবছর রেড রোডে ইদের নমাজ পড়তে যান এবং মঞ্চ থেকে বলেন, আমি প্রতিবছর আসি‌। সুকান্ত মজুমদার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, আজকের দিনে তিনি নিজেকে হিন্দু বলে দাবি করছেন, প্রায় ৫০ কোটি মানুষ প্রয়াগে স্নান করেছেন। নিজেকে হিন্দু মনে করলে আপনিও আসুন। প্রতিবছর তো রেড রোডে যান। এক বছর না হয় কুম্ভে স্নান করবেন, দেখি কত বড় সাহস, কত বড় ক্ষমতা আপনার।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ইস্যুতে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, হিন্দু-বিরোধী ভণ্ডামি বন্ধ করুন। পবিত্র মহাকুম্ভকে “মৃত্যু কুম্ভ” বলে সম্বোধন করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক বক্তব্য হিন্দুধর্মের অন্যতম সম্মানিত ঐতিহ্যের অপমান ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি স্পষ্টতই তোষণের রাজনীতির একটি প্রচেষ্টা, যেখানে তিনি প্রকাশ্যে অন্যদের পক্ষপাত করে হিন্দু উৎসবগুলিকে অবজ্ঞা করার সুযোগ হাতছাড়া করেন না। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মহাকুম্ভ পরিদর্শন করতে এবং পবিত্র স্নান করা ৫০ কোটিরও বেশি ভক্তের জন্য করা বিশাল আয়োজন প্রত্যক্ষ করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। আপনি যদি সত্যিই সাম্যতায় বিশ্বাসী হন, তাহলে কুম্ভ মেলায় যান। ঠিক যেমন তিনি প্রতি বছর ইদের নমাজে যোগদান করেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন তিনি কখনও কুম্ভ পরিদর্শন করেননি? কেন তিনি তার ভোট ব্যাঙ্কের জন্য হিন্দু ঐতিহ্যকে আক্রমণ করেন? তার হিন্দু-বিরোধী মানসিকতা বারবার উন্মোচিত হয়েছে – তা দুর্গা বিসর্জন সীমাবদ্ধ করা হোক, হিন্দু প্রতিষ্ঠানগুলিকে উপেক্ষা করে মাদ্রাসাগুলিকে অর্থ সাহায্য করা হোক, অথবা হিন্দু সন্ন্যাসী এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হোক। মহাকুম্ভকে “মৃত্যু কুম্ভ” বলা তার হিন্দু-বিরোধী কর্মকাণ্ডের দীর্ঘ তালিকার সর্বশেষ সংযোজন। কিন্তু ২০২৬ সাল ঘনিয়ে আসছে, আর তার শাসনেরও শেষ। বাংলা ও ভারতের মানুষ আর তার হিন্দু-বিরোধী শাসন সহ্য করবে না। কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। লজ্জা! লজ্জা!”

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্য লিখেছেন, মহাকুম্ভকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অযাচিত আক্রমণ হলো ২০২৬- এর তার আশু পরাজয়ের প্রথম লক্ষণ। কেজরিওয়ালকে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেতে দেখে তিনি ঘাবড়ে গেছেন। তিনি চূড়ান্ত পরাজয়ের ভয় পাচ্ছেন।”

এদিকে মমতার এই শব্দবন্ধের প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীর কুম্ভ সম্পর্কে শব্দবন্ধ এবং বিজেপি বিধায়কদের সাসপেনশনের প্রতিবাদে বিজেপি পরিষদীয় দল বৃহস্পতিবার গোটা বিধানসভাজুড়ে মিছিল করবে বলে ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভা চত্বর থেকে বেরিয়ে এসে মিছিল যাবে রাজভবনে। রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানানো হবে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মহাকুম্ভকে মৃত্যুকুম্ভ মন্তব্য প্রত্যাহার করার এবং ক্ষমা চাওয়া দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কথায় এটা হিন্দুদের উপর আঘাত, মহা কুম্ভের উপর আঘাত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *