আমাদের ভারত, ২৪ মে: ভারতের ফেলা জল বোমায় নাস্তানাবুদ অবস্থা পাকিস্তানের। খুব তাড়াতাড়ি এই জল বোমা নিষ্ক্রীয় করুন, শাহবাজ শরিফ সরকারের কাছে এমনটাই আবেদন জানিয়েছে সে দেশের সেনেটর সৈয়দ আলি জাফর।
২২ এপ্রিল পেহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। পাকিস্তানে সংসদে বক্তব্য রাখার সময় পাকিস্তানের বিরোধী দল তেহরিক- ই- ইনসাফ পার্টির সেনেটার সৈয়দ আলি জাফর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সিন্ধু নদীর উপর পাকিস্তানের ১০ জনের মধ্যে ৯ জন নির্ভরশীল। ফলে এই জল সংকট যদি তাড়াতাড়ি মেটানো না হয়, তাহলে একটা বড় সংখ্যক মানুষ ক্ষুধায় মারা যেতে পারে।
তাঁর কথায়, “আমরা যদি এখনই এই জলসঙ্কট না মেটাই আমরা ক্ষুধায় মারা যেতে পারি। কারণ সিন্ধু অববাহিকা আমাদের লাইফ লাইন। দেশের বাইরে থেকে তিন চতুর্থাংশ জল আসে আমাদের। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন জীবন ধারণ করতে আন্তর্জাতিক সীমানার এই অববাহিকার ওপর নির্ভর করে।”
তাঁর কথায়, পরিসংখ্যান অনুযায়ী, “আমাদের শস্যের নব্বই শতাংশ এই জলের উপর নির্ভর করে। আমাদের সব বিদ্যুৎ প্রকল্প এই নদী বাঁধের জলের উপর নির্ভরশীল। তাই আমাদের এটা বোঝা উচিত যে এটা আমাদের ওপর একটা জল বোমা হিসেবে ঝুলছে। সেটা আমাদের নিষ্ক্রীয় করতে হবে। এটা আমাদের সমাধান করতে হবে।
১৯৬০ সালের সিন্ধু চুক্তির আওতায় সিন্ধু, ঝিলম, চন্দ্রভাগা নদীর জল ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে পাকিস্তানের। ভারত ইরাবতী, শতদ্রু, বিপাশার জল ব্যবহার করতে পারে। এই নদীগুলির উপরে পাকিস্তানের পানীয় জলের যোগান ও সেচ কাজের অনেকটা অংশ নির্ভরশীল। ভারত সেই চুক্তি স্থগিত রাখার ঘোষণা করলে পাকিস্তান তাতে আপত্তি জানায়। তাদের দাবি ছিল, একতরফাভাবে ভারত চুক্তি স্থগিত করতে পারে না। এক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিক স্তরেও কথা বলার চেষ্টা করে। ইসলামাবাদ থেকে চিঠিও আসে নয়া দিল্লিতে।
২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগাঁও- এ হামলা চালায় পাক মদদ পুষ্ট জঙ্গিরা। ২৬ জন নিরীহ হিন্দু মানুষকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে তারা। তারপর থেকে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত ক্রমশই বাড়তে থাকে। পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি প্রথমে স্থগিত রাখে দিল্লি। এরপর পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি জঙ্গি ঘাটি ও গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বায়ু সেনা। তাতে ১০০-র বেশি জঙ্গি মারা যায় বলে জানাগেছে।